শেখ আবদুল্লাহ,
আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি-
চট্টগ্রামের আনোয়ারায় জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা নিয়ে চরম ভোগান্তি ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন উপজেলার বাসিন্দারা। নবনির্বাচিত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যানদের দ্বন্দ্বের কারণে নতুন ভোটার কার্যক্রম বন্ধ থাকায় এর খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ জনগণকে। এদের মধ্যে অধিকাংশই আবার প্রবাসী ও বিদেশগামী।
জানা গেছে, জাতীয় নির্বাচন ও ষষ্ঠ ধাপের ইউপি নির্বাচনের জন্য দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল উপজেলার নতুন ভোটার কার্যক্রম। তবে সম্প্রতি কার্যক্রম আবার শুরু হয়েছে। কিন্তু নতুন ভোটার কার্যক্রমে রোহিঙ্গাদের যাতে কোনভাবেই তালিকাভুক্ত হতে না পারে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিতেই ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের চার রোহিঙ্গা অধ্যুষিত জেলায় ‘বিশেষ সভা’ কার্যক্রম চালু করা হয়। চট্টগ্রামের সাত উপজেলার মধ্যে আনোয়ারাও রয়েছে সেই তালিকায়। এসব উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) আহ্বায়ক এবং নির্বাচন কর্মকর্তাদের সদস্য সচিব করে থানার ওসি, ডিএসবি, এনএসআই কর্মকর্তা, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের সদস্য করে ‘বিশেষ সভা’ গঠন করা হয়। প্রতি ১৫ দিন পর পর এই ‘বিশেষ সভা’ আহ্বান করে নতুন এনআইডি আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়।
এদিকে সদ্য অনুষ্ঠিত হওয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচনকে ঘিরে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান কাজী মুজাম্মেল হকের সঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যানদের দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। ফলে নিরাপত্তার অজুহাতে ইউপি চেয়ারম্যানরা উপজেলা পরিষদের সভাগুলোতে যাচ্ছেন না। একই কারণে ইসির ‘বিশেষ সভা’ য়ও অনুপস্থিত থাকায় ভোটার আবেদন যাচাই-বাছাই করা যাচ্ছে না। যে কারণে বন্ধ রয়েছে উপজেলা নির্বাচন অফিসের নতুন ভোটারের আবেদন।
মামুন নামে এক প্রবাসী ভুক্তভোগী জানান,‘উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের পর নতুন ভোটারের জন্য কাগজপত্র জমা নেওয়া হচ্ছে এমন খবর পেয়ে নির্বাচন অফিসে আসি। তবে নির্বাচন অফিসে দায়িত্বরত জানালেন কাগজপত্র জমা নিতে বারণ করা হয়েছে। এই পর্যন্ত কাগজপত্র জমা দিতে ৩ বার নির্বাচন অফিসে এসেছি। কিন্তু তারা জমা নেন নি।’
উপজেলা নির্বাচন অফিসার আবু জাফর ছালেহ জানান, বিশেষ সভায় ইউপি চেয়ারম্যানরা অনুপস্থিত থাকায় কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করতে না পারার কারণে ভোটার কার্যক্রম আপাতত স্থগিত রয়েছে। নতুন যেসব আবেদন জমা হয়েছে তাদের মধ্যে বেশিরভাগই প্রবাসী।
জানতে চাইলে বারশত ইউপি চেয়ারম্যান এম এ কাইয়ুম শাহ্ জানান, ‘অন্যান্য সভায় উপস্থিত না হওয়ার বিষয়টি ভিন্ন। তবে বৃষ্টির কারণে ‘বিশেষ সভা’য় উপস্থিত হতে পারিনি। এটা যেহেতু জনগণ সংশ্লিষ্ট বিষয় তাই অতিদ্রুত আরেকটা সভা আয়োজনের ব্যবস্থা করতে বলা হবে।
এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইশতিয়াক ইমন জানান, ৪ থেকে ৫ ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা আসছেন। যেসব ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা আসেননি সেসব ইউনিয়নের নতুন ভোটার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :