একটি সুন্দর মানব জীবন গঠনে রেডিওর ভুমিকা অনস্বীকার্য


প্রকাশের সময় : জুলাই ২৯, ২০২৪, ৮:৪১ পূর্বাহ্ন / ৭১
একটি সুন্দর মানব জীবন গঠনে রেডিওর ভুমিকা অনস্বীকার্য

কৃষ্ণ কর্মকার কৌশিক-

লেখনির প্রারম্ভে জানাই পরম শ্রদ্ধেয় পিতা মাতার প্রতি ও সৃষ্টিকর্তার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ভক্তি ও ভালোবাসা। বন্ধু ছাড়া জীবন চলে না। তাই মানুষের জীবনে বন্ধুর বড় প্রয়োজন। তবে সে বন্ধু হবে অকৃত্রিম ও সত্যিকারের হিতৈষী বন্ধু। যার সংস্পর্শে এলে নিজেকে সমৃদ্ধ অলংকৃত করা যায়।

পাশাপাশি জীবনের সুখ-দুঃখের কথা একে অপরের সাথে ভাগাভাগি করে আনন্দ পাওয়া যায় ও দুঃখ হালকা করা যায় এর নামই বন্ধু। তবে বন্ধু যে শুধু একজন মানুষ হতে হবে তা নয়। বন্ধু হতে পারে একটি গাছ একটি প্রাণী, একটি বাস্তব সম্পদও। আমার জীবনে চলার পথে এ জাতীয় এক বন্ধু পেয়েছি, যে আমাকে, আমার জীবনকে বদলে দিয়েছে। তবে তার নাম হ’ল বেতার যন্ত্র রেডিও। একটি সুন্দর পারিবারিক জীবন, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, রাষ্ট্র, সুন্দর সুশৃঙ্খল জীবন দান করতে একমাত্র রেডিওর ভুমিকা অনস্বীকার্য। একটি মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত রেডিও কে আগলে রেখে চলতে পারলে সব দিক থেকে সুন্দর ভাবে জীবন যাপন করতে পারবে আমার ধীর বিশ্বাস।

বর্তমান ডিজিটাল যুগে এখন ও বাংলাদেশ বেতার মানুষকে সচেতন করে আসছে যেমন ঘুর্ণিঝড়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মুক্তিযুদ্ধ, বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ বেতার অসময়ে বন্ধু হয়ে পাশে থেকে মানুষকে সাবলীল করার চেষ্টা করে চলেছে। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন তথ্য প্রযুক্তির যুগে টেলিভিশন, ডিস লাইন, বিভিন্ন মাধ্যম কিন্তু রেডিও যন্ত্র এখন ও সুন্দর জীবন লাভ করতে রেডিও ওর ভুমিকা অপরিসীম।

আমি রেডিও শ্রবণ করি ২০০৩ সাল থেকে যখন আমি একটু একটু বুঝি তখন থেকে। আমার জীবনে রেডিও ওর সাথে পরিচয় আমার মাতামহন দাদুভাই স্বর্গীয় ইন্জি. সার্জেন্ট হেমন্ত কুমার কর্মকারের হাত ধরে। তার মাধ্যমেই রেডিও শোনার আগ্রহ জন্মে আমার। আমি যখন ছোটবেলায় মামা বাড়ি বেড়াতে যেতাম তখন দেখতাম দাদু কানের পাশে রেডিও সেট রাখত কোন জায়গায় গেলে সবার কাছে রেডিওর প্রশংসা করত ও রেডিও শোনার পরামর্শ দিতো। আমি বাল্যকালে দুষ্টমী করতাম খেতে চাইতাম না আমাকে ও আমার বোনদের ও আমার মামাতো ভাইদের একসঙ্গে নিয়ে তার পাশে বসিয়ে রেডিও শোনাতেন।

রাতে ছায়াছবির গান ও নাটক শুনিয়ে ঘুম পড়াতেন ও খাবার খাওয়াতো সেই স্মৃতি ভোলার মতো না ও পরবর্তীতে বাবাকে অনুরোধ করার পর মাকে একটি রেডিও সেট ক্রয় করে দেয় ও সেটি আমার কাছে থাকতো সব সময় যখন স্কুল থেকে আসার পর কাজের ফাঁকে পড়াশোনা ফাঁকে রেডিও শোনতাম। যতই শুনছি ততই নিজেকে সমৃদ্ধ করতে পেরেছি ও একটু একটু বড় হওয়ার তখন বাংলাদেশ বেতার খুলনা কেন্দ্রে লেখালেখি শুরু করি আস্তে আস্তে অন্যান্য বেতার কেন্দ্রের সাথে জড়িত হই ও লেখালেখি শুরু করি বর্তমানে প্রায় ১২ টির মত সরকারি বেসরকারি ও কমিউনিটি রেডিওতে চিঠি লেখি ও কুইজে অংশগ্রহণ করি ও বিজয়ী হই। আমার লেখা বিভিন্ন বেতার কেন্দ্রে প্রচার করে।

যেমন-বাংলাদেশ বেতার, ঢাকা, বাংলাদেশ বেতার রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, গোপালগঞ্জ, চট্টগ্রাম, সিলেট, ঠাকুরগাঁও, রংপুর, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, বাণিজ্যিক কার্যক্রম বাংলাদেশ বেতার ঢাকার “খ” ও ট্রান্সক্রিপশন সার্ভিস, ইত্যাদি। এছাড়াও কমিউনিটি রেডিও, রেডিও মহানন্দা এফ.এম ৯৮.৮, রেডিও সারাবেলা, রেডিও স্বপ্ন, রেডিও পদ্মা, রেডিও গাঙচিল, উত্তরবঙ্গ বেতার, কৃষি রেডিও, রেডিও সুন্দরবন প্রভৃতি।

এছাড়াও বিদেশি বেতার কেন্দ্র যেমন চীন আন্তর্জাতিক বেতার, রেডিও তেহরান, রেডিও জাপান, রেডিও সুইজারল্যান্ড, রেডিও কুয়েত, রেডিও পাকিস্তান, আকাশবাণী কোলকাতা, রেডিও জর্ডান, রেডিও ভেরিতাস, রেডিও ফিলিপাইন, রেডিও রোমানীয়া, ফ্রান্স ইন্টারন্যাশনাল রেডিও। রেডিও আম্বার, এবং ভারতের ছত্রিশ ঘরের পরিবার বন্ধু শর্টওয়েব রেডিও ক্লাব, রেডিও মালয়েশিয়া, এ সকল রেডিও স্টেশনে লেখালেখি ও কুইজ বিজয়ী হয়ে পুরস্কার ও সম্মাননা ও সনদ অর্জন করছি।

আমার জীবনে যত সফলতা অর্জন করছি তা রেডিওর মাধ্যমে আমি একদিন রেডিও শুনতে ভুলে গেলে মনে হয় কি যেন হারিয়েছে। আমার সোনার সংসারে একমাত্র ভরসা রেডিও। রেডিওতে কৃষি বিষয়ক, লেখাপড়া বিষয়ক, খেলাধুলা বিষয়ক, ছায়াছবির গান, নাটক, কবিতা, আবৃত্তি, শিশু বিষয়ক, চিকিৎসা বিষয়ক প্রভৃতি অনুষ্ঠান শ্রাবণের ধারার মত শ্রবন করি ও অন্যকে শোনার পরামর্শ দেই আমি একটি বেতার শ্রোতা সংঘ পরিচালনা করছি নিবন্ধনকৃত তার নাম হ’ল “উদ্ভাসিত বেতার শ্রোতা সংঘ” তার আমি প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। বেতার শোনার সুবিধা সমুহ যেমন-

১. রেডিও শুনতে বিদ্যুৎ খরচ হয় না।
২. পরিবারের সকলে মিলে এক সাথে শুনা যায়।
৩. কাজের ক্ষতি হয় না।
৪. চেয়ে থাকা লাগে না।
৫. ওজন কম হওয়ায় সব খানে বহন যোগ্য।
৬. মোবাইল এ্যাপসের মাধ্যমে শোনা যায়।
৭. বিশ্বের যে কোন প্রান্তে বসে শোনা যায়।

পরিশেষে সবাইকে রেডিও শোনার উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে আমার লেখা শেষ করছি সবাইকে ধন্যবাদ দিয়ে।

লেখক-
কৃষ্ণ কর্মকার কৌশিক
প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি
উদ্ভাসিত বেতার শ্রোতা সংঘ
গ্রাম-দক্ষিণ বন্দর কর্মকার পট্টি
ডাকঘর-মঠবাড়ীয়া
উপজেলা-মঠবাড়ীয়া
জেলা-পিরোজপুর


There is no ads to display, Please add some