[gtranslate]

কবিতা- শান্তি নিকেতনের পথে- জাসমিনা খাতুন


প্রকাশের সময় : অক্টোবর ১৮, ২০২৫, ৮:৫২ অপরাহ্ন / ১০৩
কবিতা- শান্তি  নিকেতনের পথে- জাসমিনা খাতুন

 

আমি জাসমিনা খাতুন—
ভাইপো আয়ান আরজু, ভাই মেহেদী হাসান পাশে,
রেলগাড়ির ঝাঁকুনিতে ছুটেছি ২০২৪-এর পথে।
ছোট ছোট ঘটনা, ছোট ছোট মনভরা অনুভব—
স্মৃতির পাতায় লেখা, যেন জীবনের কবিতা সব।

শান্তিনিকেতনে প্রথম পরিচয়,
আমি তখন মাত্র পাঁচ বছরের—
বাবা মোহাম্মদ জসিমউদ্দিন তখন রানাঘাটে প্যাথলজিস্ট,
বোলপুর মেলার আলোয় আমার শৈশব-আনন্দ স্মৃতি।

সেই একটা আত্মিক টান, বাতাসেই ছিল রবির ডাক—
ফিরে ফিরে গেছি বারবার,
রবির আলোয় রাঙা রাত্রি, নিঃশব্দে ছিল চোখের তৃষ্ণা-পাখি।

বড় ভাই মোহাম্মদ আলি জিন্নাহর সরকারি চাকরি
বোলপুর সরকারি হাসপাতালেই, ভাই তখন ওখানেই থাকে ভাড়া বাড়ি।

আমার বহু বন্ধুর নিজের বাড়ি, বন্ধুদের দল, চেনা রাস্তা, সন্ধ্যা-ছায়ার গান,
সবই আজ হৃদয়ে আঁকা, স্বপ্নের মতো প্রাণ।

ছোট ভাই পড়ল এম.এসসি,
তারও গন্তব্য বোলপুরেরই ধুলোবালি—
আমার ভেতরে জমে থাকা আর-এক বন্ধন,
সেই শহর, সেই পথ, সেই রবীন্দ্র-অনুপ্রাণন।

কিন্তু আজ কেন জানি
নিজেকে গুটিয়ে রাখি,
ঘরের বাইরের রোদে এখন আর রবিকবির গন্ধটা থাকে না বাকি।

হয়তো রাস্তায় ধুলো,
হয়তো নিরাপত্তাহীন পায়ে হোঁচট—
হয়তো হাওয়াতেই নেই আর সে চেনা সুর,
তবু চোখ বুজলেই ভেসে আসে এক রক্তজবা দুপুর।

২০১২ সালে লালবাগ কলেজে, প্রিয় প্রিয় বন্ধু-বান্ধবী,
আর একসঙ্গে আমাদের এগারো জন বান্ধবী
দুটো বছর কাটানোর স্মৃতি—
একদিন হঠাৎ স্বপ্নে এলেন প্রাণের রবি,
আজও মনে হয় সত্যি—
তিনি যেন আমার মনেই লিখে গেছেন কবিতা রবি।

শান্তিনিকেতনে ভোরের নিঃশ্বাসে ভীষণ করে হারাতে ইচ্ছে
আজও সেই নিঃশ্বাস আমার ফুসফুসে জাগে,
প্রাণে বাজে গোপন রাতের গল্পের সাথে।

হাজারপুর আমার শেকড়,
তবু শান্তিনিকেতন আমার আত্মার ঠাঁই—
রবীন্দ্রনাথ, তুমি চিরকাল থাকবে
আমার হৃদয়জুড়ে, নিঃশব্দে, নির্জন নির্ভর-ছায়ায়।

  1. রামপুরহাট, বীরভূম, ভারত
    ৭/১০/২০২৫