[gtranslate]

কলকাতায় বাংলাদেশি ইলিশের ক্রেতা সংকট, দাম নিয়ে চিন্তায় আমদানিকারকরা


প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৫, ৯:২৩ অপরাহ্ন / ৭৫
কলকাতায় বাংলাদেশি ইলিশের ক্রেতা সংকট, দাম নিয়ে চিন্তায় আমদানিকারকরা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

বাংলাদেশ থেকে ইলিশ আসার খবরে উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন কলকাতার মানুষ। তবে বাজারে পৌঁছেই দাম আকাশছোঁয়া হওয়ায় ক্রেতাদের আগ্রহ দ্রুত হারাচ্ছে। ফলে বাংলাদেশি ইলিশ আমদানি চালিয়ে যাওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন ভারতীয় আমদানিকারকরা। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া

কলকাতার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশি ইলিশ কেনায় সাধারণ ক্রেতারা খুব একটা আগ্রহ দেখাননি। শুক্রবারও লেক মার্কেট, গারিয়াহাট ও মানিকতলার খুচরা ব্যবসায়ীরা হাওড়ার পাইকারি বাজার থেকে মাত্র ৫ থেকে ২৫ কেজি করে ইলিশ নিয়েছেন।

এদিকে শোনা যাচ্ছে, গুজরাট থেকে বড় একটি ইলিশের চালান শিগগিরই কলকাতার বাজারে আসবে। ব্যবসায়ীরা ধারণা করছেন, এতে বাংলাদেশি ইলিশের চাহিদা আরও কমে যাবে। কারণ গুজরাটের ইলিশের দাম তুলনামূলক অনেক কম, যা সাধারণ ক্রেতার সাধ্যের মধ্যেই থাকবে।

বর্তমানে কলকাতায় এক কেজির বেশি ওজনের বাংলাদেশি ইলিশ খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ রুপিতে, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকার সমান। বিপরীতে একই সাইজের গুজরাটের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১ হাজার ১০০ রুপিতে। এছাড়া মিয়ানমার থেকে আনা হিমায়িত ইলিশও বাজারে ছাড়ার প্রস্তুতি চলছে, যা ১ হাজার ৫০০ রুপিতে পাওয়া যাবে।

কলকাতা মাছ আমদানি অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি আনোয়ার মাসুদ বলেন, “বাংলাদেশি ইলিশের দাম কমবে বলে মনে হচ্ছে না। বর্তমান দামে খুব কম মানুষ এ মাছ কিনবে। আগামী সোমবার পর্যন্ত বাজার পর্যবেক্ষণ করে আমদানি চালু রাখা হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

প্রথম চালানে গত মঙ্গলবার পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে ৫০ টন বাংলাদেশি ইলিশ ভারতে প্রবেশ করলেও শুক্রবার পর্যন্ত মাত্র ২০ টন ইলিশ এসেছে। ডায়মন্ড হারবারের স্থানীয় মাছ তুলনামূলক সস্তা হওয়ায় ব্যবসায়ীরাও বাংলাদেশি ইলিশের বড় স্টক তুলতে সাহস পাচ্ছেন না।

মানিকতলার ব্যবসায়ী রাজু দাস বলেন, “বাংলাদেশি মাছের গঠন ভালো হলেও আকারে ছোট এবং দাম অনেক বেশি। বড় সাইজের মাছ হলে এই দামও মানা যেত। ডায়মন্ড হারবারের মাছ থাকলে বাংলাদেশি ইলিশের ক্রেতা থাকবে না।”

তবু কলকাতার অনেকের কাছে বাংলাদেশের ইলিশের প্রতি আলাদা টান রয়েছে। তাদের একজন ক্রেতা আয়ুস্মান মুখার্জি। শুক্রবার তিনি ২ হাজার ৫০ রুপি দিয়ে একটি বাংলাদেশি ইলিশ কিনে নেন। তাঁর ভাষায়, “দাম বেশি হলেও বাংলাদেশের ইলিশের স্বাদ অন্যরকম।”

উচ্চমূল্যের কারণে আমদানিকারকরা যখন দ্বিধায়, তখন গুজরাট ও মিয়ানমারের ইলিশ বাজারে প্রবেশের অপেক্ষায়। ফলে আগামী সপ্তাহেই ঠিক হবে কলকাতার বাজারে বাংলাদেশি ইলিশের ভাগ্য।