

ডেস্ক রিপোর্ট :
জুলাই আন্দোলনের সময় সারা দেশে মোট ৩ লাখ ৫ হাজার ৩১১ রাউন্ড গুলি ছোড়ার তথ্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ উপস্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু ঢাকা মহানগরেই ছোড়া হয় ৯৫ হাজার ৩১৩ রাউন্ড গুলি।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযুক্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ৫৪তম সাক্ষ্য দেন তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর। তিনি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের দেওয়া ২১৫ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে এ তথ্য আদালতে উপস্থাপন করেন।
এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম, তানভীর হাসান জোহা ও আবদুস সাত্তার পালোয়ান। আসামিপক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম জানান, জুলাই আন্দোলন দমনে সারাদেশে গুলি ছোড়ার যে হিসাব পুলিশের প্রতিবেদনে পাওয়া গেছে, তাতে দেখা যায়—৩ লাখ ৫ হাজারের বেশি রাউন্ড গুলি ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে শুধুমাত্র ঢাকা মহানগরেই ৯৫ হাজারের বেশি রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়েছিল।
এর আগে শনিবার প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম জানান, এই মামলার সর্বশেষ (৫৪তম) সাক্ষী হিসেবে তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীরের জবানবন্দি ও জব্দকৃত ভিডিও সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। গত বুধবার ৫৩তম সাক্ষ্য হিসেবে বিশেষ তদন্তকারী কর্মকর্তা ও প্রসিকিউটর তানভীর হাসান জোহা আদালতে সাক্ষ্য দেন।
তদন্ত কর্মকর্তা জোহা জানান, শেখ হাসিনার ফোনালাপের ৬৯টি অডিও ক্লিপ ও তিনটি মোবাইল নম্বরের কললিস্ট (সিডিআর) জব্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে চারটি ফোনালাপ আদালতে বাজিয়ে শোনানো হয়েছে এবং তা সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। ফোনালাপগুলোর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও শেখ হাসিনার আত্মীয় শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে একটি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে দুটি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এএসএম মাকসুদ কামালের সঙ্গে একটি ফোনালাপ রয়েছে।
এ মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন তদন্ত সংস্থার উপ-পরিচালক মো. জানে আলম খান। পরবর্তীতে উপ-পরিচালক মো. আলমগীর তদন্তের দায়িত্ব নেন। তাকে সার্বিক সহযোগিতা করেন বিশেষ তদন্তকারী কর্মকর্তা তানভীর হাসান জোহা। গত ১২ মে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়, এরপর ৩১ মে সম্পূরক অভিযোগ ও ১ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়।
গত ১০ জুলাই মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে সাবেক আইজিপি মামুন নিজেকে ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হিসেবে যে আবেদন করেছিলেন, তা মঞ্জুর করেন আদালত।
আপনার মতামত লিখুন :