[gtranslate]

ঠাকুরগাঁওয়ে আদিবাসী মুন্ডা সম্প্রদায়ের সোহরাই গোয়ালপুজা উৎসব


প্রকাশের সময় : অক্টোবর ২২, ২০২৫, ১০:০০ পূর্বাহ্ন / ৬১
ঠাকুরগাঁওয়ে আদিবাসী মুন্ডা সম্প্রদায়ের সোহরাই গোয়ালপুজা উৎসব

পেয়ার আলী, 

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি: 

ঠাকুরগাঁওয়ের আদিবাসী মুন্ডা সম্প্রদায়ের পাহানদের অন্যতম প্রধান উৎসব গোয়ালপুজা ও সোহরাই উৎসব পালন করা হয়। ২১ অক্টোবর মঙ্গলবার এই দিন জেলার রাণীশংকৈল উপজেলায় বসবাসরত আদিবাসী মুন্ডা সম্প্রদায়ের পাহান লোকেরা শ্যামাপুজা অর্থাৎ কালিপুজায় ঘরোয়া ভাবে পালন করে থাকেন। ধারণা করা হয় যে, কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে এই পুজা করার রীতে আছে বলে যায় এই সম্প্রদায়ের পুরোহিতদের কাছ থেকে। এদিন বাড়ির বাড়ির আঙ্গিনায় এই সম্প্রদায়ের মহিলার চালের আটা দিয়ে আলপনা করেন বিভিন্ন ডিজাইনের। এ দিন বাড়িতে থাকা ঘরের আসবাবপত্র পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়। এবং বিশেষ কাজে কৃষিতে ব্যবহৃত সরঞ্জামদি পানিতে ধুয়ে পরিষ্কারসহ গবাদি পশুদের নদীতে বা পুকুরে গোসল করে ভালো ভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করা হয়। কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে এ পুজা বা উৎসব পালন করা হয়ে থাকে। এ দিন বাড়ির মহিলাগণ নানাবিধ সাজে ঘর রাঙিয়ে তোলেন এবং চালের গুড়া দিয়ে আলপনা আঁকেন। ঘরের আসবাবপত্র পরিষ্কার করা পরিষ্কার করা। হয় এবং চালের গুঁড়ো করা পানি এগুলোতে ছিটিয়ে দেওয়া হয়। গৃহকর্তা সকাল থেকে উপবাস করে দুপুর বেলায় স্নান সেরে পরিষ্কার কাপড়ে গোয়ালে বসে পূজা করেন। পূজার উপকরণ হিসেবে একটি কাঁসার থালায় ধূপ, সিঁদুর, আতপ চাল, তাপান (হাড়িয়া পানি) পিঠা ব্যবহৃত হয় এবং এক জাতীয় গাছের ডাল খুটি হিসেবে ব্যবহৃত হয় যেটা ভগবানরূপে পুজিত হয়। হয়, গরুর গোয়ালে লাল মোরগ সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশ্যে বলি দেওয়া হয়। প্রতিটি গরু ও মোষের শিঙে তেল ও সিঁদুর মাখিয়ে মাথায় ধান শিষের তৈরী মোড় পরানো হয়। এরপর গৃহকত্রী নববস্ত্র পরে উলুধ্বনি দিয়ে গাভি পূজা করেন, যাকে গরু চুমা বলা হয়ে থাকে। এই দিনে গবাদিপশুকে ভাল খাবার খাওয়ানো হয়। সহরায় উৎসবে মূলত গৃহপালিত পশুর মঙ্গল কামনা ও কৃষিকার্য সুচারু ভাবে সম্পন্নের জন্য শক্তির বন্দনা করা হয়। এবং সব আয়ের উৎসসূচক স্থানে গিয়ে নেচে নেচে মঙ্গল কামনা করা হয়। অঞ্চল ভেদে পুজাটির নামের ভিন্নতা রয়েছে। এই পুজাটি আদিবাসীদের সমাজে প্রচলিত রয়েছে। মূল আনুষ্ঠানিকতা তিন দিনের হলেও ধুমধামের বেশ থাকে চার থেকে পাঁচ দিন।