[gtranslate]

ঢাকায় মেট্রোরেল দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কর্তৃপক্ষ ও যাত্রীদের করণীয়


প্রকাশের সময় : অক্টোবর ২৭, ২০২৫, ৫:১৫ অপরাহ্ন / ৩৮
ঢাকায় মেট্রোরেল দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কর্তৃপক্ষ ও যাত্রীদের করণীয়

সরকার মো. আবুল কালাম আজাদ-

ঢাকার মেট্রোরেল আমাদের দেশের আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থার এক যুগান্তকারী সংযোজন। তবে এই আধুনিক ব্যবস্থার সুষ্ঠু পরিচালনায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কর্তৃপক্ষের প্রযুক্তিগত প্রস্তুতি এবং যাত্রীদের সচেতনতা-উভয় দিকেই সমান গুরুত্ব দিতে হবে।
কর্তৃপক্ষের করণীয়:
১️. নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিদর্শন: রেললাইন, সিগন্যাল, ব্রেকিং সিস্টেম ও বিদ্যুৎ সংযোগ নির্দিষ্ট সময় পর পর পরীক্ষা করা জরুরি।
২️. বিয়ারিং প্যাড রক্ষণাবেক্ষণ: বিয়ারিং প্যাডের ক্ষয়, বিকৃতি বা ঢিলেঢালা সংযোগ মেট্রোরেলের স্থায়িত্ব নষ্ট করে। তাই নিয়মিত পরিদর্শন ও সময় মতো প্রতিস্থাপন করতে হবে।
৩️. দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবল নিয়োগ: চালক, টেকনিশিয়ান ও নিরাপত্তাকর্মীদের মানসম্মত প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে।
৪️. স্মার্ট মনিটরিং ব্যবস্থা চালু রাখা: উচ্চক্ষমতার সিসিটিভি, সেন্সর, অ্যালার্ম সিস্টেম ও কন্ট্রোল রুমের রিয়েল-টাইম মনিটরিং চালু রাখতে হবে।
৫️. জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা পরিকল্পনা: দুর্ঘটনা বা ত্রুটি ঘটলে দ্রুত উদ্ধার, চিকিৎসা ও যোগাযোগের জন্য জরুরি টিম প্রস্তুত রাখতে হবে।
৬️. নিরাপত্তা নির্দেশিকা প্রচার: স্টেশন ও ট্রেনে নিরাপত্তা বার্তা, পোস্টার ও অডিও ঘোষণার মাধ্যমে যাত্রীদের সচেতন করা।
৭️. প্রযুক্তি হালনাগাদ ও মাননিয়ন্ত্রণ: অ্যান্টি-কোলিশন সিস্টেম, অটোমেটিক ট্রেন কন্ট্রোল (ATC) ও ডিজিটাল সিগন্যালিং ব্যবস্থার রক্ষণাবেক্ষণ ও আপডেট নিশ্চিত করতে হবে।

যাত্রীদের করণীয়:

১️. নির্দেশনা মেনে চলা: স্টেশনের সাইন বোর্ড, ঘোষণা ও কর্মীদের নির্দেশ অনুসরণ করতে হবে।
২️. দরজা বন্ধ হওয়ার সময় সতর্ক থাকা: ট্রেন চলমান অবস্থায় বা দরজা বন্ধ হওয়ার সময় ওঠা-নামা করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
৩️ নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা: প্ল্যাটফর্মের হলুদ রেখার পেছনে দাঁড়িয়ে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
৪️. সন্দেহজনক বস্তু থেকে দূরে থাকা: অপরিচিত ব্যাগ বা সন্দেহজনক বস্তু দেখলে নিরাপত্তা কর্মীদের জানাতে হবে।
৫️. জরুরি পরিস্থিতিতে ধৈর্য রাখা: অগ্নিকাণ্ড বা ত্রুটির সময় আতঙ্কিত না হয়ে কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে।
৬️. পরিচ্ছন্নতা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখা: ট্রেন বা স্টেশনে আবর্জনা না ফেলা এবং ভিড়ের সময় শৃঙ্খলা বজায় রাখা।
৭️. শিশু ও প্রবীণদের সহায়তা করা: বৃদ্ধ, শিশু ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন যাত্রীদের ওঠানামায় সহযোগিতা করা দায়িত্বশীল নাগরিকের আচরণ।
মেট্রোরেল শুধু আধুনিকতার প্রতীক নয়, এটি নাগরিক সচেতনতারও প্রতিফলন। কর্তৃপক্ষের প্রযুক্তি নির্ভর রক্ষণাবেক্ষণ ও যাত্রীদের দায়িত্বশীল আচরণ একত্রে হলে মেট্রোরেল হবে এক দুর্ঘটনামুক্ত, নিরাপদ ও স্মার্ট গণপরিবহন ব্যবস্থা।

লেখক-কেন্দ্রীয় সভাপতি, বাংলাদেশ পেশাজীবী ফেডারেশন, কৃষি লেখক ও কথক-বাংলাদেশ বেতার।