তাড়াশে ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় মামলা নিয়ে বানিজ্যের অভিযোগ


প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৪, ১১:৩৮ পূর্বাহ্ন / ২১
তাড়াশে ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় মামলা নিয়ে বানিজ্যের অভিযোগ

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ- সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন মো. সোহেল রানা নামে এক বিএনপি নেতা। ওই মামলার বাদী নিজেকে ছাত্র সমন্বয়ক পরিচয় উল্লেখ করায় ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ছাত্রদের মাঝে। অভিযোগ রয়েছে, মামলায় ঘটনার সাথে জড়িতদের নাম বাদ দিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না তাদেরকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলায় বানিজ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ সমন্বয়কদের।

গত ৩ সেপ্টেম্বর নওগাঁ ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. সোহেল রানা বাদী হয়ে ৫৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০০/১৫০ জনের বিরুদ্ধে তাড়াশ থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলার এজাহারে বাদী ৩৬ বছর বয়সী সোহেল রানা নিজেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক দাবী করেছেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ৪ আগষ্ট বিকেলে হাটিকুমরুল-নাটোর মহাসড়কে তাড়াশের খালকুলা নামক স্থানে ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে একত্রিত হয়। এ সময় স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা ছাত্র-জনতার উপর হামলা চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে মারপিট করে আহত করে। এ ঘটনায় ৩ সেপ্টেম্বর সোহেল রানা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রধান স্বাক্ষী করা হয় ছাত্র সমন্বয়ক মো. মুরসালিনকে। যিনি নিজেও মামলার বিষয়ে জানেন না।

মামলা নিয়ে প্রধান স্বাক্ষী মুরসালিনের সাথে বাদীর একটি কলরেকর্ড ভাইরাল হয়েছে। ওই কলরেকর্ডে মুরসালিন বাদীকে বলেন, আপনি যে মামলা করেছেন সেই মামলায় আমাকে ১নং স্বাক্ষী দিলেন, সেটা কি আমার কাছে শুনছিলেন। জবাবে সোহেল রানা বলেন, এ ব্যাপারে আফসার (তাড়াশ উপজেলা বিএনপির সভাপতি) টুটুল ও জয়নুল এইসব বড়বড় নেতার সাথে কথা বলো। আমার সাথে কথা বলে লাভ হবে না। আমি কিছুই জানি না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুরসালিন বলেন, বাদী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নন। এই মামলা বিষয়ে আমাকে জানানো হয়নি। অথচ ১নং স্বাক্ষী করা হয়েছে।

আরেক সমন্বয়ক সাব্বির বলেন, এই মামলা সোহেল রানা নিজের থেকে করে নাই। মামলা করিয়েছে বিএনপি নেতা আফসার আলী ও টুটল। মামলা করিয়ে এরা একটা বানিজ্য করতে চেয়েছিল। মূল যারা আসামী তাদের নামই নেই, তাদের কাছ থেকে আফসার টুটুল টাকা পয়সা নিয়ে বাদ দিয়েছে। তিনি বলেন, তাড়াশের দুটি স্থানে আন্দোলন হয়েছে, একটি জিকেএস অপরটি খালকুলায়। কোন স্থানেই সোহেল রানা উপস্থিত ছিলেন না।

অপর সমন্বয়ক সিয়াম বলেন, যিনি মামলা দায়ের করেছেন তিনি ছাত্রও নন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কও নন। সমন্বয়ক পরিচয়ে কেন মামলা করলেন সেটা আমরা জানি না। এই মামলায় অনেকের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে, আবার জড়িত নয় এমন অনেকের নামই মামলায় এসেছে।

এ বিষয়ে মামলার বাদী সোহেল রানার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

তাড়াশ উপজেলা বিএনপির সভাপতি স.ম আফসার আলী বলেন, একজন ছাত্র বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করার কথা ছিল, কিন্তু সেই ছাত্র রাজি না হওয়ায় সোহেল রানাকে দিয়ে মামলাটি করানো হয়েছে। মামলায় সমন্বয়ক শব্দটি ভুলবশত লেখা হয়েছে। অনেকের নাম বাদ পড়েছে, তবে যেহেতু অজ্ঞাতনামা আসামী রয়েছে সেখানে বাকি আসামীদের ঢুকিয়ে দেওয়া হবে।

তাড়াশ থানার ওসি আসলাম হোসেন বলেন, একজন মামলা দায়ের করতেই পারে। তবে তদন্ত করে দেখে মূল অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।