বিশেষ প্রতিনিধি-
বরেন্দ্র অঞ্চল হিসেবে সুপরিচিত নাম তানোর উপজেলা। বর্তমানে তানোর উপজেলার যেদিকে তাকাই চোখ যায় যতদূর শুধু সবুজের সমারোহ আর সবুজের সমারোহ। মাঠ জুড়ে আমন ধানের ক্ষেত পরিচ্ছন্নতায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক শ্রমিকরা। অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে বেড়ে উঠতে শুরু করেছে কৃষকের স্বপ্নের ফসল আমন ধান। অন্যবছরের তুলনায় এবছর আমন রোপণের শুরু থেকে কৃষককে ব্যাপক দূর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
আমন চাষের ভরা মৌসুম আষাঢ় মাসেও ছিলনা আকাশের বৃষ্টির দেখা। যার জন্য সঠিক সময়ে আমন ধান রোপণ করতে পারেনি প্রায় কৃষক। তবে অসময়ে হলেও বাদ পড়ে নি আমন ধান চাষ করতে কোন কৃষক। আর যাঁরা আমনের শুরুতে ডিপ মটারের পানি কিনে আমন ধান রোপণ করছেন তাদের প্রায় জমিতে ধানের শীশ গজাতে শুরু করেছে।
উপজেলার বিভিন্ন আমনের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে,কমবেশি সব কৃষকের কষ্টে অর্জিত আমন ধানের সবুজ পাতার রঙে ছেয়ে গেছে মাঠ। দুএক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিটি জমিতে সম্পর্ণ ভাবে ধানের শীষ বেরিয়ে যাবে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে ,চলতি মৌসুমে আমনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২২ হাজার ৪২০ হেক্টর। কিন্তু অর্জন হয়েছে ২১ হাজার ৪২০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ।
তবে যদি আকাশের আবহাওয়া অনুকূলে থাকে তাহলে আমনের ফলনও ভালো হওয়ার আশাবাদী কৃষকরা। তানোর উপজেলার প্রকাশনগর গ্রামের কৃষক রবিউল ইসলাম বলেন, তিনি ২২বিঘা জমিতে আমন চাষ করেছেন। এখন পর্যন্ত তার খরচ হয়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা। এতে করে তার বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে ৯হাজার টাকা করে। তিনি বলেন, ধান উঠা পর্যন্ত বিঘা প্রতি আরো খরচ হবে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা মতো। এতে করে একেক বিঘা আমন ধান কাটা পর্যন্ত মোট খরচ হবে ১১ থেকে ১২ হাজার টাকা করে।
তানোর পৌর এলাকার চাপড়া গ্রামের কৃষক বাসির উদ্দিন বলেন, অন্যবছরের তুলনায় এবছর আমন চাষের জন্য কৃষককে ব্যাপক দূর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। একেতো আমন রোপণের সঠিক সময়ে বৃষ্টি ছিলনা,তার ভিতরে সার পটাশের ব্যাপক সংকট ছিলো, সার পটাশের দাও বেড়েছে তিনগুণ। যেখানে বিঘা প্রতি কৃষকরা সার পটাশ দিত ২০কেজি করে। সেখানে সার পটাশের দাম বৃদ্ধির জন্য কৃষকরা সার পটাশ দিচ্ছেন অর্ধেক করে। তার পরেও খুব ভালো হয়েছে কৃষকের আমন ধান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ জানান, আমনের এই একটি আবাদ কৃষকরা অল্প খরচে বেশি লাভবান হয়ে থাকেন। যদি কোন দূর্যোগ বালাই না হয় তাহলে আমনের ফলনও খুব ভালো হয়। আর কৃষকের আমন ধান চাষে কোন রোগ বালাই না হয় সেজন্য প্রতিনিয়ত কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তাদের মাঠ পর্যায়ে থেকে তদারকি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে কৃষকরা এবার আমন ধানের ভালো ফলন পাবেন।
আপনার মতামত লিখুন :