

ওবায়দুর রহমান সুজন,
তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি:
রাজশাহীর তানোরে ৬নং কামার গাঁ ইউনিয়ন পরিষদের মাসিক দুঃস্থ অসহায় জনসাধারণের (ভিডাব্লিউভি) প্রকল্পের আওতায় খাদ্য গুদামের প্রতি বস্তায় চাল দুই থেকে চার কেজি করে কম দেয়ার কারণ জানতে চাওয়া বা প্রতিবাদ করায় ৬নং কামারগাঁ ইউপি চেয়ারম্যান সুফি কামাল মিন্টুকে লাঞ্ছিত করে গুদামের মুল গেটে তালা মেরে আটকে রাখেন ওসিএলএসডিসহ তার ভাড়াটিয়া লোকজন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। বুধবার সকাল প্রায় ১১ টার দিকে কামারগাঁ খাদ্য গুদামে ঘটে লাঞ্ছিত ও আটকের ঘটনা। ওই গুদাম কর্মকর্তার নাম আতিকুর রহমান। সে কামারগাঁ খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন। তার ভাড়াটিয়া মশিউর রহমান ইউপি চেয়ারম্যানকে স্যান্ডেল পিটা করে লাঞ্ছিত করেন। তার বাড়ি কামারগাঁ গ্রামে। সে সিরাজ শেখের পুত্র। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা খাদ্য গুদামের মুল গেটের সামনে অবস্থান নেয়। সংবাদ পেয়ে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা ও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।খাদ্য গুদাম কর্মকর্তাকে বদলি না করলে পুনরায় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করছেন জনসাধারণ। কামারগাঁ ইউপি চেয়ারম্যান সুফি কামাল মিন্টু জানান, বুধবার সকালে ইউনিয়ন পরিষদের দুঃস্থ অসহায় (ভিডাব্লিউভি) প্রকল্পের আওতায় ৪৫৪ জনকে ৩০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হবে। এ জন্য সকাল ৯ টার দিকে ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম রাজাসহ কয়েকজন মেম্বার ও দফাদারেরা কামারগাঁ খাদ্য গুদাম থেকে চাল উত্তোলন করে পরিষদে নিয়ে আসে। সেখানে বস্তা ওজন করে ৫০ কেজির বিপরীতে শতাধিক বস্তায় ২/৪ কেজি করে চাল কম পাওয়া যায়। পরিষদ থেকে খাদ্য গুদামে গিয়ে ওসিএলএসডির কাছে বিষয়টি জানতে চাওয়া মাত্রই সে বলে আ”লীগ নেতা, আপনার কোন কথা চলবেনা। এ সময় তার সাথে থাকা কামারগাঁ গ্রামের মশিউর পায়ের স্যান্ডেল খুলে পিটানো শুরু করে মুল গেটে তালা মেরে আমাকে আটকে রাখে। আমি সাথে সাথে মোবাইলে বিষয়টি ইউএনও স্যারকে অবহিত করি। কিছুক্ষণের মধ্যেই উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা উপস্থিত হয়ে আমাকে মুক্ত করে পরিষদে নিয়ে আসেন। পরিষদে এসে চালের বস্তা ওজন করে কমের সত্যতা পান। পুনরায় খাদ্য গুদাম থেকে ৬ বস্তা চাল জরিমানা দেয়। আপনি এ বিষয়ে কোন আইনি পদক্ষেপ নিবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান আমি ইউএনও স্যারকে বলেছে দেখা যাক স্যার কি করেন।কামারগাঁ খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা ওসিএলএসডি আতিকুর রহমান জানান, খাদ্য গুদাম থেকে চাল বের হয়ে যাওয়ার পর আমার কিছুই করনীয় থাকে না। চেয়ারম্যান আমাকে লাঞ্ছিত করেছে। এ সময় আমাকে উদ্ধার করতে আসে মশিউর। ওই সময় চেয়ারম্যানকে স্যান্ডেল দিয়ে গালে আঘাত করে। আপনার গুদামে মশিউর কেন আর চেয়ারম্যানকে লাঞ্ছিত করে আটকে রেখে ছিলেন কেন জানতে চাইলে আবোল তাবোল কথা বলে দায় সারার চেষ্টা করেন তিনি। গুদাম থেকে চাল বের হওয়ার পরে করনীয় নাই তাহলে ৬ বস্তা চাল জরিমানা দিলেন কেন প্রশ্ন করা হলে উত্তরে তিনি বলেন স্যার দিতে বলেছে এ জন্য দেয়া হয়েছে। খাদ্য গুদাম কর্মকর্তার এমন কথার প্রেক্ষিতে স্থানীয়রা তার বদলির জন্য উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তার কাছে দাবি জানান। উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা শেখ মলিউজ্জামান সজিব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যাতে করে খাদ্য গুদামের ভিতরে এমন ঘটনা আর না ঘটে।স্থানীয়রা সহ ইউপি সদস্যরা জানান, খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা একজন চেয়ারম্যানকে কিভাবে লাঞ্ছিত করতে পারেন এটা সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে। সে এখানে দায়িত্ব পালনের পর থেকে নানান ঘটনার জন্ম দিয়েছে। ইচ্ছে মত সবকিছু করে থাকেন। সাধারণ মানুষেরা চরম হয়রানির শিকার হয়। চাল তুলতে এলেই টাকা ছাড়া কিছুই বুঝে না। টাকা না দিলেই ঘন্টার পর ঘন্টা বসিয়ে রাখে। কিছু বললেই বিভিন্ন নেতার ভয় দেখায়। থানার ওসি আফজাল হোসেন জানান, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়ে ছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। এ ঘটনায় কোন পক্ষই অভিযোগ দায়ের করেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :