তোফাজ্জলকে হত‍্যার আগে ২ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছিল, দাবি তার ভাবীর


প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪, ১০:৪৫ অপরাহ্ন / ১৬২
তোফাজ্জলকে হত‍্যার আগে ২ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছিল, দাবি তার ভাবীর

 

শাকিল মিয়া, বরগুনা জেলা প্রতিনিধি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে ‘চোর সন্দেহে’ বরগুনার পাথরঘাটার মাসুদ কামাল তোফাজ্জলকে (৩০) পিটিয়ে হত্যার আগে পরিবারের কাছে ২ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছিল।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) তোফাজ্জলের ভাবি শরিফা বেগম এমনটা দাবি করেন।তিনি বলেন দুই লাখ টাকা না পেয়ে আমার ভাইটাকে মেরে ফেলল।তোফাজ্জলের মা-বাবাও বেঁচে নেই বেঁচে নেই তার আপন ভাই। ভাই ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।

শরিফা আক্তার বলেন, ‘গতকাল রাতে আমার ফোনে দুটি নম্বর থেকে কল দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘‘তোফাজ্জল মোবাইল চুরি করেছে, ওকে আটকে রাখা হয়েছে। ছাড়িয়ে নিতে দুই লাখ টাকা পাঠাতে হবে।” পরে আমি আমার সকল আত্মীয়-স্বজনকে জানাই। তাদের সাথে আর রাত্রে কোন যোগাযোগ করতে পারিনি। সকালে জানতে পারি ওকে হত্যা করা হয়েছে। আমার দেবর তোফাজ্জল হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘তোফাজ্জল বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কাঠালতলী ইউনিয়নের তালুকের চরদুয়ানী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ২০২০ সাল থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন ও চোর নয়। পরিবারের কেউ না থাকায় ওর চিকিৎসা করানো যায়নি। এক সময় ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সব সময় এলাকাতেই থাকতেন।’

পরিবার সূত্রে জানা যায়, তোফাজ্জল পিরোজপুর সরকারী সোহরাওয়ার্দী কলেজ থেকে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করেন। ছাত্রজীবনে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পাথরঘাটা উপজেলার কাঠালতলী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন। ২০১১ সালে তোফাজ্জলের বাবা আব্দুর রহমান সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান, ২০১৩ সালে মা বিউটি বেগম লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। একমাত্র বড় ভাই নাসির পুলিশে চাকরি করতেন। ২০২৩ সালে লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তিনিও মারা যান। পরিবারে রয়েছেন একমাত্র বড় ভাইর স্ত্রী ও তার দুই সন্তান।

খোজ নিয়ে জানা যায়, তোফাজ্জল তার এলাকার একটি মেয়েকে পছন্দ করতেন। মেয়ের পরিবার ওই মেয়েকে অনত্র বিয়ে দেওয়ার পর তোফাজ্জল ২০২০ সালে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। পরিবারের কেউ না থাকায় পরিবার ও অভিভাবকহীন হয়ে রাস্তায়-রাস্তায় ঘুরতেন তিনি। ক্ষুধার প্রয়োজনে মানুষের কাছ থেকে চেয়ে খেতেন।

পাথরঘাটা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: আল মামুন বলেন, আমাকে ঢাকা থেকে ফোন দিয়ে জানিয়েছে একজন মানসির ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চোর সন্দেহে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। এর পরে আমি নাম ঠিকানা যাচাই করে জানতে পরেছি তার বাড়ি কাঠালতীল এলাকার তালুক চরদুয়ানী গ্রামে তার বাড়ি। সে মানসিক ভারসাম্যহীন ছিল। তার পরিবারকে সংবাদ দিয়েছি। তারা ঢাকাতে যোগাযোগ করেছেন, সেখান থেকে তারা লাশ নিয়ে আসবেন। লাশের আইনি প্রক্রিয়া সেখান থেকেই শেষ করে পাঠাবেন তারা।


There is no ads to display, Please add some