

মকবুল হোসেন, ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি:
“টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ও প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন” শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
আজ ২৯ অক্টোবর বুধবার ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ও সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) টিআইবি ময়মনসিংহের আয়োজনে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম।
উক্ত কর্মশালায় সনাক ময়মনসিংহের সভাপতি অ্যাডভোকেট কে এস হাবিব খান সভাপতিত্ব করেন।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জেলা প্রশাসক বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সকলকে সোচ্চার হতে হবে। দুর্নীতি উন্নয়নের অন্তরায়। এতে ব্যক্তি লাভবান হয়, পক্ষান্তরে সমাজ ও দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
আয়-ব্যয়ের বৈষম্যকে দুর্নীতির অন্যতম কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, সমাজে যার কাছে টাকা আছে তার গ্রহণযোগ্যতা বেশি, এই মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থে কেউ যখন সমাজে সম্মান পায়, তখন অন্যরাও সেই পথে চলতে উৎসাহিত হয়। তাই সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন অপরিহার্য।
তিনি আরও বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক উদ্যোগ নিতে হবে এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থায় সংস্কার আনতে হবে। দুর্নীতি প্রতিরোধে সরকার বিভিন্ন খাতের সেবাকে ডিজিটালাইজড করেছে, যা স্বচ্ছতা বাড়িয়েছে ও দুর্নীতির সুযোগ হ্রাস করেছে। নাগরিক পরিচয়পত্র, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন, পাসপোর্ট আবেদন, ভূমি তথ্যসহ বিভিন্ন বিল অনলাইনে পরিশোধের ফলে জনগণের সেবাপ্রাপ্তি সহজ ও স্বচ্ছ হয়েছে।
প্রধান অতিথি বলেন, দুর্নীতি বন্ধে সবচেয়ে জরুরি মানসিকতার পরিবর্তন। ক্ষমতাকে ক্ষমতা হিসেবে না দেখে দায়িত্ব হিসেবে দেখতে হবে। হযরত আলী (রা:) যেমন গভর্নর নিয়োগে এহসান এবং ন্যায়বিচার করার দক্ষতাকে অগ্রাধিকার দিতেন, তেমনি চরিত্রও দেখতেন। ইউরোপের মানুষ অমুসলিম হলেও কাজেকর্মে তারা ন্যায়বিচার ও শুদ্ধাচার অনুশীলন করে, যা বাংলাদেশে কম দেখা যায়।
সভাপতির বক্তব্যে সনাক ময়মনসিংহের সভাপতি এডভোকেট কে.এস হাবিব খান বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন বিষয়ক আইন বইয়ের পাতায় অনেক লিখা আছে, তা কর্মক্ষেত্রে চর্চা করতে হবে। নিজের আচরণে নৈতিকতার স্পর্শ আনতে পারলে সংস্কার সম্ভব। নিজেকে শুদ্ধাচারী করতে পারলে তখনই প্রতিষ্ঠানিক সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা যাবে।
এ কর্মশালায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ) আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ডেপুটি সিভিল সার্জন বক্তৃতা করেন। এছাড়া ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের সিভিক এনগেজমেন্ট কো-অর্ডিনেটর মোঃ আতিকুর রহমান কর্মশালায় তথ্যবহুল মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এসময় স্থানীয় প্রশাসন, সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি ও গণমাধ্যমকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :