বিশেষ প্রতিনিধি ঃ
এলাকাবাসীর তোপের মুখে উচ্ছেদ অভিযান থেকে ফিরে এসেছেন মহেশখালীর ইউএনও
মহেশখালীতে ক্ষতিপূরণ আদায় ও পূনর্বাসন না করে বাড়িঘরে উচ্ছেদ অভিযান চালাতে গিয়ে এলাকাবাসীর তোপের মুখে ফিরে আসতে হয়েছে মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ ইয়াসিনের নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযানে থাকা পুরো দলকে।
বিদেশ থেকে আমদানি করা জ্বালানি তেল জাহাজ থেকে দ্রুত ও সাশ্রয়ীভাবে খালাস করার জন্য গভীর সমুদ্রে ডাবল পাইপলাইনের সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) প্রকল্পের পাইপ লাইন চালানোর জায়গায় থাকা এসব ঘরবাড়ি উচ্ছেদের জন্যই এ অভিযান চালানো হয় বলে জানা যায়।
মঙ্গলবার (৩জানুয়ারী) বেলা ১২টায় উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের সোনারপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানান, মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এসপিএম প্রকল্পের কয়েকজন কর্মকর্তা বাড়িঘর ছেড়ে দেয়ার জন্য বেশ কয়েকবার মৌখিক ভাবে অবগত করেন। কিন্তু ভুক্তভোগী পরিবার গুলো এর বিনিময়ে ক্ষতিপূরন সহ পূনর্বাসনের দাবি জানান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কোন ধরণের ক্ষতিপূরণ না দিয়ে এবং পূনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে বেলা ১২টার দিকে আনসার সদস্য, পুলিশ, এসপিএম প্রকল্পের লোকজন সহ ইউএনও’র নেতৃত্বে বুলডোজার নিয়ে বাড়িঘর ভাংচুর করতে আসেন। পরক্ষনেই ভুক্তভোগীরা বাঁধা দেন। ওই সময় আনসার সদস্যদের লাঠিপেটায় বেশ কয়েকজন মহিলা আহত হয় বলে অভিযোগ করেন ভোক্তভুগীরা।
আলমগীর নামের একজন সেখানকার ভুক্তভোগী বলেন, “এসপিএম প্রকল্পের রাস্তার দক্ষিণ পাশে দীর্ঘ একশো বছর ধরে বংশ পরম্পরায় ২০টি পরিবারে প্রায় দেড়শো মানুষ বসবাস করে আসছে বহু আগে থেকেই। এই জায়গায় পাইপ লাইন নির্মানের জন্য ক্ষতিপূরণ ও পূনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে ইউএনও’র নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযান চালাতে আসে। এই শীতে পূনর্বাসনের ব্যবস্থা না করলে আমরা এত গুলো মানুষ যাবো কোথায় ?”
উচ্ছেদ অভিযান চালানো সেখানকার কয়েকজন ভুক্তভোগী তাহমিনা, শাহেদা আকতার পপি সহ আরো কয়েকজন বলেন, তারা দুপুরে রান্নার কাজ করছিলেন। ওই সময় ইউএনও’র নেতৃত্বে বাড়িঘর উচ্ছেদ করতে আসে একটি টিম। অথচ আমাদের জমি গুলো খতিয়ানভুক্ত। আমরা বাঁধা দিলে ইউএনও’র নির্দেশে আনসার সদস্যরা আমাদের লাঠিচার্জ করে।
খোজ নিয়ে জানা যায়, দেশের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি তেলের চাহিদা পূরণ এবং জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমদানীকৃত ক্রুড অয়েল ও ফিনিশড প্রডাক্ট স্বল্প সময়ে, স্বল্প খরচে এবং নিরাপদে খালাস করার জন্য প্রায় সাড়ে ৬হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ‘ইনস্টলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) উইথ ডাবল পাইপলাইন’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ও চীন সরকারের মধ্যে জিটুজি ভিত্তিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) অধীনস্থ কোম্পানি ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
উক্ত বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ ইয়াসিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি সরাসরি মুখের উপর না করে বলেন, এই বিষয়ে আমি কোন বক্তব্য দিতে পারবোনা
আপনার মতামত লিখুন :