যমুনা সার কারখানা::সরিষাবাড়ীতে আ.লীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত-১৩


প্রকাশের সময় : অক্টোবর ৩১, ২০২২, ৫:০৫ অপরাহ্ন / ৬০২
যমুনা সার কারখানা::সরিষাবাড়ীতে আ.লীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত-১৩

 

কামরুজ্জামান লিটন, সরিষাবাড়ী প্রতিনিধি:

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় অবস্থিত যমুনা সারকারখানায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ হয়েছে।
এ ঘটনায় পুলিশসহ উভয়পক্ষে আহত হয়েছে অন্তত ১৩ জন হয়েছে।

গতকাল রবিবার রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত যমুনা সারকারখানা এলাকায় এ সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকলেও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছিলো।

এ বিষয়ে পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর এস আই আজিজ বাদি হয়ে দুই গ্রুপের প্রধান রফিক ও মানিককে প্রধান আসামী করে ১২০ জনের নাম উল্যেখ ও একশত জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে মামলা দায়ের করেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, যমুনা সারকারখানায় আধিপত্য বিস্তার ও আমদানিকৃত সারের পরিবহন চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ও পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম মানিক গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিলো। রবিবার রাত ৯টার দিকে রফিকুল ইসলাম সমর্থিত রায়হান কান্দারপাড়া বাজারে হামলার শিকার হন।

এই খবর ছড়িয়ে পড়লে রফিকুল ইসলামের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে কারখানার গেটপাড় এলাকায় এলে আশরাফুল আলম মানিক গ্রুপের সাথে সংঘর্ষ বাধে। এসময় উভয়পক্ষে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ কয়েক রাউন্ড গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে পুলিশের এস আই আজিজ, এ এস আই সাইফুল, কন্সটেবল সালাম ডিলের আঘাতে আহত হয়। অপরদিকে উভয় গ্রুপের মিনহাজ, রায়হান, রফিক, মজিদ, রশিদ, লালন, লাল চানসহ উভয়পক্ষে অন্তত ১০ জন আহত হন। গুরুতর আহত মিনহাজ ও রফিককে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম মানিক জানান, রবিবার রাত পৌনে ৯টার দিকে রফিকুল ইসলাম সমর্থিত রায়হানকে কান্দারপাড়ার কিছু লোক মারধর করে। বিষয়টি আমার লোকজনের উপর দায় চাপিয়ে তারা উত্তেজিত ও সংঘবদ্ধ হয়ে হামলা চালায় এবং প্রকাশ্যে অস্ত্র উচিয়ে গুলি করে।

অপরদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করেন, রাতে আওয়ামীলীগের কর্মী রায়হানের উপর অতর্কিত হামলা চালায়, চরপাড়ার মিনহাজের উপর হামলা করে তার পা কেটেছে, এবং চরপাড়া গ্রামের রফিককেও আহত করেছে। আশরাফুল আলম মানিকের লোকজন বার বার কেন আমার লোজনের উপর হামলা করে আমি জানিনা। এবং প্রকাশ্যে তারা অস্ত্র উচিয়ে গুলি করে। তবে উভয়ই একে অপরের গুলিবর্ষণের অভিযোগ করেন।

এদিকে সাবেক ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষের জের ধরে রাত ১১টার দিকে তার বাড়িতে হামলা চালিয়ে নগদ টাকা ও মূল্যবান মালামাল লুটতরাজ করা হয়।

এছাড়াও স্থানীয় বুশরা বানিজ্যিক সংস্থার ম্যানেজার মো. শাহ আলম জানান, সংঘর্ষের সময় উত্তেজিত লোকজন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়েছে। ভাঙ্গচুরে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এ ব্যাপারে সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ মহব্বত কবীর বলেন, যমুনা সারকারখানা এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন দুইটি পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। উভয় পক্ষের ১২০ জনের নাম উল্লেখ্য ও ১ শত কে অজ্ঞাত নাম দিয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার সময় দুইজনকে আটক করা হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকলেও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছিলো।