লাভজনক চাষ কচুমুখিতে ঝুকছেন শার্শার কৃষক


প্রকাশের সময় : জুলাই ১৩, ২০২৪, ১১:৩৯ পূর্বাহ্ন / ৮৮
লাভজনক চাষ কচুমুখিতে ঝুকছেন শার্শার কৃষক

রাজু রহমান, শার্শা (যশোর) জেলা প্রতিনিধি-

তরকারীর দাম বৃদ্ধি ও তরকারী চাষ তুলনামুলক লাভ জনক হওয়ায় শার্শার চাষীরা তরকারী চাষে বেশি ঝুকছেন। এর মধ্যে কচুমুখি বা মুখিকচু চাষ বেশি লাভ জনক হওয়ায় এই চাষে ঝুঁকে পড়ছেন যশোরের শার্শার অনেক কৃষক। কচু চাষে তুলনামূলক রোগবালাই হয় ও সারের প্রয়োজন কম, উৎপাদন ভাল ও স্থানীয় ভাবে সহজলভ্য, পাইকারি ও খুচরা বাজার সৃষ্টি।

নিয়মিত কৃষি বিভাগ থেকে চাষিদের উৎসাহ ও পরামর্শ প্রদান। অল্প খরচে অধিক লাভজনক হওয়ায় মুখিকচু চাষে একদিকে যেমন আগ্রহ বেড়েছে চাষিদের। অন্য দিকে মৌসুমি এই কাজে নিন্ম আয়ের পরিবারের সদস্যদের অন্তভূক্তিতে খন্ডকালিন কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ পরিবার গুলোতে বাড়তি আয়ের ব্যবস্থাও হচ্ছে ।চাষিদের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় প্রতি মৌসুমে বৃদ্ধি পাচ্ছে মুখিকচু চাষ।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি বছর উপজেলায় ১২০ হেক্টর জমিতে মুখিকচু চাষ হয়েছে।

অল্প খরচে অধিক লাভ জনক হওয়ায় গত বছরের তুলনায় এ বছর ৮ হেক্টর বেশি জমিতে মুখি কচুর চাষ হয়েছে।এর ভেতর সব চেয়ে বেশি চাষ করা হয়েছে উপজেলার নিজামপুর ইউনিয়নে  প্রায় ৮০ থেকে  ৮৫ হেক্টর জমিতে। কেরালখালী-বাসাবাড়ি, বসন্তপুর-পাড়িয়ারঘোপ, কন্দর্পপুর-ভায়না এলাকাতেই ৫০ হেক্টরের বেশি জমিতে মুখি কচুর চাষ হয়েছে।

উপজেলার নিজামপুর ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার মাঠ ঘুরে দেখা যায়, শত শত বিঘা জমিতে দেশি ও উচ্চ ফলনশীল হাইব্রীড জাতের মুখিকচুর চাষ করা হয়েছে। পাড়িয়ারঘোপ গ্রামের আবু ফজল, মিকাইল বিশ্বাস, সহিদুল্লাহ। কেরালখালির বাবু, রমজাস, তোতা, ইরফান, সালাম ও বিপ্লব, ভায়নার আজগার, বসন্তপুরের সাধন দেবনাথ ও নৈহাটি গ্রামের তবিসহ বেশ কয়েকজন চাষির সাথে কথা হলে তারা জানান। এ বছর সকলে ৫ থেকে ২০ বিঘা জমিতে মুখিকচু চাষ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং তেমন কোন রোগবালাই না হওয়ায় প্রতি বিঘায় আনুমানিক ৭০-৮০ মণ কচু উৎপাদনের আশা প্রকাশ করছেন।

চাষিরা আরও বলেন, কচু তোলার সময়ে যদি বৈরি আবহাওয়ার মধ্যে পড়তে না হয় তবে সব খরচ বাদ দিয়ে তিনি দুই লক্ষাধিক টাকার লাভবান হবেন। এ বছর আবহাওয়া ভাল থাকায় সকলেই কচুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন এবং সেই সাথে ভাল দাম পাবারও আশা করছেন। সকলে বিঘা প্রতি ৪৫-৫০ হাজার টাকা লাভের মুখ দেখবেন বলে আশা করছেন।

ধান অপেক্ষা সবজি কচু চাষ অধিক লাভজনক হওয়ায় এই অঞ্চলের চাষিদের মধ্যে কচু চাষে মৌসুমি ভিত্তিক আগ্রহ বাড়ছে। এ কাজে এলাকার নিন্ম আয়ের পরিবারের সদস্যরা কচু উৎপাদনে পরিচর্যা, জমিতে কচু তোলা, পরিষ্কার, শ্রমিকের কাজ ও পরিবহনে খন্ডকালিন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হওয়ায় স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে সকলে কাজ করে বাড়তি অর্থ উপার্জন করে এই সময়ে কিছুটা সাবলম্বী হচ্ছেন।

বাসাবাড়ি বাজারের হালিমা ট্রেডার্সের মালিক কচুর পাইকারী ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে চাষিরা পুরোদমে মাঠের উৎপাদনকৃত মুখিকচু না উঠালেও স্থানীয় বাজার গুলোতে  অল্প সংখ্যক কচু উঠতে শুরু করেছে। শুরুতে দামও বেশ চড়া। আগামি এক-দুই সপ্তাহের মধ্যেই পুরোদমে কচু উঠতে শুরু করবে।

নিজামপুর ইউনিয়নে দায়িত্বরত উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা বলেন, মুখিকচু চাষে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করা ও নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হয়। মালের গ্রেডিং বিষয়ে ধারণাসহ উৎপাদিত পণ্য সহজলভ্য ভাবে বিক্রয়ের জন্য উপজেলার  বাসাবাড়ি বাজারে আমার কর্ম এলাকায় পাইকারি বাজার সৃষ্টি করণে কৃষি বিভাগ থেকে সহযোগিতা করা হয়েছে। ।
শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিপক কুমার সাহা বলেন, মুখিকচু চাষে কোন মাঠ প্রদর্শনী না থাকলেও উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে চাষিদের চাষপযোগী সকল সহযোগিতা সহ প্রযুক্তিগত সহযোগিতা থাকবে।


There is no ads to display, Please add some