লালমনিরহাটে শীতের তীব্রতার সঙ্গে বাড়ছে লেপ-তোশক-জাজিম কারীগরদের ব্যস্ততা


প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ১২, ২০২৪, ৮:৪২ অপরাহ্ন / ৩৬
লালমনিরহাটে শীতের তীব্রতার সঙ্গে বাড়ছে লেপ-তোশক-জাজিম কারীগরদের ব্যস্ততা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি-

লালমনিরহাটে শীতের তীব্রতার সঙ্গে বাড়ছে লেপ, তোশক, জাজিমসহ কম্বলের কদর। ফলে এসব সামগ্রী তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে কারীগররা।

সরেজমিনে লালমনিরহাটের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতাদের চাহিদা হরেক রকমের তুলা দিয়ে ছোট বড় লেপ বা তোশক তৈরি করার। বর্তমানে কারীগরদের ব্যস্ততা সঙ্গে ক্রেতাদের ভিড়ও বেড়েছে। দোকানীরা ক্রেতাদের বিভিন্ন মানের কাপড় ও তুলা দেখাচ্ছেন, নিচ্ছেন অর্ডার। কারীগররা তৈরি করছেন বিভিন্ন সাইজের লেপ-তোশক-জাজিম। লালমনিরহাট জেলার শহরের লেপ-তোশক তৈরির ১৪ থেকে ১৫টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর্মযজ্ঞ চলছে সকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত। বাজারে সব রকমের জিনিসের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লেপ-তোশক তৈরির উপকরণের খরচও বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার প্রতি গজ লেপ তৈরির কাপড়ের দাম ৫০-৬০টাকা, তোশকের প্রতি গজ কাপড়ের দাম ৪৫-৫০টাকা এবং প্রতি গজ জাজিম তৈরির কাপড়ের দাম রাখা হচ্ছে ১২০-১৫০টাকা করে। প্রকারভেদে গার্মেন্টস তুলা ৫০ থেকে ১০০ টাকা, ফোম তুলা ২০০ টাকা, শিমুল তুলা ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি জুটের দাম রাখা হচ্ছে ৩৫-৪০টাকা করে। এ বছরের প্রায় সব ধরনের তুলার কেজিতে ২০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। এ বছর এক পিস রেডিমেট লেপ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে, তোশক বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১৭০০ টাকার মধ্যে। এছাড়া জাজিম বিক্রি হচ্ছে ২৫০০টাকা থেকে ৪০০০টাকার মধ্যে। এ ছাড়া বালিশ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ২০০ টাকায়।

লালমনিরহাটের বড়বাড়ী বাজারে লেপ-তোশকের কারীগর শরিফুল ইসলাম (২২) বলেন, ঠান্ডা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাজের চাপ ও বাড়ছে। এখন রাত ১২ টা পর্যন্ত কাজ করেও মহাজনের চাহিদা পূরণ করতে পারছি না। এবার গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করছি। কারীগর মাসুদ (৩৫) বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও শীতের আগে ব্যস্ততা বেড়েছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত লেপ-তোশক তৈরির কাজ চলে আমাদের। একটি লেপ তৈরি করলে আকারভেদে ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা এবং তোশক তৈরি করতে পারলে প্রতিজন ১৫০-৩০০ টাকা মজুরি পাই।

ক্রেতা আকবর (৫৪) বলেন, লেপের জন্য দোকানে গিয়ে অর্ডার দিচ্ছি ২টি লেপের। এতে মোট খরচ পড়েছে চার হাজার ৪০০টাকা। রাতে শীতের তীব্রতা বাড়ে। কাঁথা দিয়ে শীত নিবারণ হয় না। এ কারণে অল্প টাকা দিয়ে লেপ বানিয়ে নিচ্ছি। প্রবীণ কারীগর আমজাদ হোসেন (৬০)বলেন, বছরের বেশিরভাগ সময়ই আমাদের বসে থাকতে হয়। শীতের তিন মাস সিজন, এ সময়ে ব্যস্ততা বেশি থাকে। এবারে আগে ভাগেই মৌসুম চলে এসেছে। লেপ-তোশক তৈরির কাজের চাপ বেড়েছে। সকাল থেকে রাত অবধি কাজ করে ক্রেতাদের চাহিদা মতো ডেলিভারি দিতে হচ্ছে। একেকজন কারীগর প্রতিদিন গড়ে ৪-৫ টি করে লেপ বানাতে পারে। এতে ৫০০-৬৯৯ টাকা আয় হয়। বর্তমানে এ আয় দিয়ে চলতে হিমশিম খেতে হয়।