

>>>জাসমিনা খাতুন>>>
বীরভূম জেলার সাংস্কৃতিক ভাণ্ডারে এক উজ্জ্বল নাম—তৈমুর খান। তাঁর লেখা কাব্যগ্রন্থ আরশি নিকেতন পাঠ করার সৌভাগ্য আমাকে যে গভীর মানবিক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি করেছে, তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। এই বই শুধু একটি কাব্য সংকলন নয়—এ এক আত্মজৈবনিক আবেগ, এক জীবনসংগ্রামের কবিতাময় দলিল।
প্রতিটি পৃষ্ঠায় ফুটে উঠেছে কবির শৈশব, প্রেম, দারিদ্র্য, শিক্ষা জগতের লড়াই ও টিকে থাকা এবং
সাহিত্যজীবনের দীর্ঘ লড়াই ও আত্মপ্রকাশের অন্তর্দহন। কখনও চোখ ভিজেছে, কখনও হৃদয়ে বেজেছে সাহস ও অনুপ্রেরণার সুর। কবি কীভাবে লেখার জগতে প্রবেশ করেছেন, কোন পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়েছে তাঁর লেখা, কোন কোন কবির সান্নিধ্যে তিনি সাহিত্যচর্চা করেছেন—এই সব তথ্য কেবল তাঁর জীবনী নয়, পাঠকের কাছে এক অমূল্য দিশারী।
সম্মানিত লেখক তৈমুর খান তাঁর সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে তুলে এনেছেন সেই সব মানুষদের কথাও, যাঁরা প্রতিভাবান হয়েও তাদের লেখা প্রকাশের সুযোগ পাননি। উঠে এসেছে সেই সময়ের সমাজব্যবস্থা, যোগাযোগব্যবস্থা, দরিদ্রশ্রেণির জীবনযাপন, শ্রমজীবী মানুষের গল্প, এমনকি প্রথম প্রেমের কোমল অনুভূতি—যা সব মিলিয়ে পাঠককে নিয়ে যায় এক বাস্তব, অথচ অলৌকিক যাত্রায়।
এই গ্রন্থ আমাদের শেখায়—জীবনসংগ্রাম থেকেই কীভাবে জন্ম নেয় গল্প,কবিতা, উপন্যাস ইত্যাদি ইত্যাদি। এক সাধারণ পাথর কীভাবে শালগ্রাম শিলায় পরিণত হয়, তারই অনন্য দলিল আরশি নিকেতন।
আমি আন্তরিকভাবে অনুরোধ করব, যাঁরা সত্যিকারের সাহিত্যপ্রেমী, তাঁরা যেন এই কাব্যগ্রন্থ সংগ্রহ করেন। আরশি নিকেতন হৃদয়কে খুলে দেয়, চোখে আনে দৃষ্টির নব আলো। এটি শুধুমাত্র একটি আত্মজীবনীগ্রন্থ নয়—এ এক জীবন্ত প্রেরণার উৎস ও সেই সময়ের শিক্ষা-সংস্কৃতির আয়না।#

জাসমিনা খাতুন — একজন প্রখ্যাত কবি
রামপুরহাট, বীরভূম, ভারত।
এ/জে
আপনার মতামত লিখুন :