শেরপুরে ‘করোনা উত্তর শিক্ষা ব্যবস্থা : চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণ ভাবনা’ শীর্ষক সংলাপ।


প্রকাশের সময় : নভেম্বর ১৯, ২০২২, ১০:০৫ অপরাহ্ন / ৫৯৬
শেরপুরে ‘করোনা উত্তর শিক্ষা ব্যবস্থা : চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণ ভাবনা’ শীর্ষক সংলাপ।

.এম রিয়াদুর রহমান রিয়াদ, স্টাফ রিপোর্টার ঃ

শেরপুরে ‘করোনা (কোভিট-১৯) উত্তর শিক্ষা ব্যবস্থা : চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণ ভাবনা’ শীর্ষক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নাগরিক প্ল্যাটফরম জনউদ্যোগ শেরপুর কমিটি এ সংলাপের আয়োজন করে। শেরপুর সরকারী মহিলা কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনে আয়োজনে ১৯ নভেম্বর শনিবার অনুষ্ঠিত সংলাপে সভাপতিত্ব করেন, অত্র কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. হাবিবুর রহমান।

জন উদ্যোগ আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সঞ্চালনায় সংলাপে করোনা উত্তর ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষা ব্যবস্থাকে কীভাবে দ্রুত ক্ষতি কাটিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যায়, সে বিষয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের নানা পরামর্শ ও দিক নির্দেশনা উঠে আসে। এ সংলাপে শিক্ষা কর্মকর্তা, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক এবং কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং সুধীবৃন্দসহ ৭০ জন অংশগ্রহণ করেন। এতে অন্যান্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন শিক্ষাবিদ ও গবেষক ড. আব্দুল আলীম তালুকদার, শেরপুর মডেল গার্লস ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তপন সারওয়ার, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রেজুয়ান, সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল কাদির, শওকত হোসেন, ইদ্রিসিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা ফজলুর রহমান, তেরাবাজার কওমী মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা মিনহাজ উদ্দিন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম রব্বানী, আয়শা সিদ্দিকা প্রমুখ। এছাড়াও কবি-লেখক জ্যোতি পোদ্দার, কবি রবিউল ইসলাম, শামীমা পারভীন, মিষ্টি বেগম, জেলা আ’লীগের শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক মো. শামীম হোসেন, চলচ্চিত্রকার আবু রায়হান পাভেল, শিক্ষার্থী ফারাবি জাবীন সয়েরী, জান্নাতুত তারিন, রাবেয়া রায়হান প্রকৃতি, ইমামুল হাসান তানভীর, পুণম রায় রিমি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। বক্তাদের আলোচনায় ওঠে আসে করোনার কারণে সরাসরি ক্লাস করতে না পারায় শিক্ষার্থীদের মনোজগতের ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে।
তারা এখন ক্লাসে শিক্ষককে প্রশ্ন করতে ভয় পাচ্ছে। এতে তাদের জ্ঞানভান্ডার খুলছে না। নীচের ক্লাসের ভীত শক্ত হওয়ার আগেই ২/৩ ক্লাস উপরে প্রমোশন হওয়ায় শিক্ষন পদ্ধতিতে মারাত্মক ঘাটতি দেখা দিয়েছে। প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা এখন ঠিকমতো রিডিং পড়তে পারেনা। প্রথম শ্রেনীতে কিছু না পড়েই তারা এখন তৃতীয় শ্রেনীর পাঠ নিচ্ছে। অনলাইনে ক্লাশ হলেও সকল শিক্ষার্থী সে সুযোগ সমানভাবে পায়নি। যে কারণে শিক্ষার্থীদের মাঝে এক ধরনের বৈষম্যের সৃষ্টি হচ্ছে। অনলাইন পাঠে স্মার্টফোন-ইন্টারনেটের ব্যবহার কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভার্চূয়াল জগতের নানা অসঙ্গতিতে শিশুদের আসক্ত করেছে। যে কারণে তাদের পাঠাভ্যাসে ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। সামনে ২০২৩ সালে নতুন সিলেবাসের শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক মূল্যায়নের পদ্ধতি চালু হতে যাচ্ছে। এতে করে সামনের দিনে নতুন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। অনেকেই আশংকা করেছেন, এতে হয়তো শিক্ষার্থীদের পাঠ দক্ষতা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে ঘাটতি থেকে যেতে পারে। কোন কোন ক্ষেত্রে দুর্নীতি-অনিয়মের আশংকাও ব্যক্ত করেছেন কেউ কেউ।
সংলাপে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সংকট উত্তরনের উপায় হিসেবে যে সব সুপারিশ ওঠে আসে তার মধ্যে রয়েছে, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক সকলকে আরো সচেতন হতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত পাঠদানের ব্যবস্থা করতে হবে। মুখস্ত বা গাইড নির্ভর শিক্ষার পরিবর্তে বাস্তবমুখি এবং অনুশীলনধর্মী শিক্ষা পদ্ধতি চালু করতে হবে। শিশুদের মোবাইল-ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতামুলক পন্থা অবলম্বন করতে হবে। শিক্ষার উদ্দেশ্য ডাক্তার, ইঞ্জিনীয়ার, প্রযুক্তিবিদ হওয়া নয়, নৈতিক মুল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার পদক্ষেপ নিতে হবে। সেজন্য সিলেবাসকে আরো যুগোপযোগী ও আধুনিক করতে হবে। শিক্ষাক্ষেত্রে সকল অনিয়ম, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা দূর করতে হবে।


There is no ads to display, Please add some