শৈশব স্মৃতি


প্রকাশের সময় : জুন ১৩, ২০২৪, ১২:৪৭ পূর্বাহ্ন / ৯৪
শৈশব স্মৃতি

সুবর্ণা দাস

বাতায়ন পাশে দখিনা বাতাসে,
নিসর্গ নিরব।
স্মৃতির পাতায় কথা বলে যায়,
হারানো শৈশব।
মুগ্ধ জোনাকি দিয়ে মোরে ফাঁকি,
যায় সুদূরে চলে।
বসে আনমনে মাধবীর সনে,
হৃদয় কথা বলে।
ভোরের বেলায় ঘুম থেকে জেগে
সাজি নিয়ে হাতে
ফুল কুড়াতাম মন ভরাতাম,
মালা গেঁথে তাতে।
দেবালয় থেকে মধুর ধ্বনিতে
সকালের আগমন।
গাছের ডালেতে মাটির চাকাতে,
আমকে নিমন্ত্রণ।
কাঁচা পাকা আম মন ভরাতাম,
মেখে লবণের সাথে।
পাকা কাঁঠালেতে মুড়ি নিয়ে তাতে,
দুধও নিতাম পাতে।
বেলা বয়ে যায় পিছু ডাকে মা’য়
ছিল খেলার ধুম।
বিকেল বেলাতে দোলে দোলনাতে,
চোখে নামতো ঘুম।
গাছের উপরে খাবারের তরে,
পেয়ারাটা যে পাকা।
ঠাকুমার বসা নিয়ে আশঙ্কা
কি যে আকুল ডাকা।
দাঁড়িয়াবাধায় বিকেল বেলায়
খুশিতে ছিল বড় মন।
স্কুলের পাঠেতে খুব মনোযোগী
ঠিক লক্ষীর মতন।
নীরব দুপুরে মধ্য পুকুরে
অবাধ কাটা সাঁতার।
ক্ষণ বয়ে যায় ঘন্টা দু’পার
রাগে দৌড়ানি মা’র।
লাকড়ি চুলাতে মৌ মৌ ঘ্রাণে
মন প্রাণ উচাটন,
মায়ের হাতের রান্নার স্বাদে
আজও মুগ্ধ মন।
মিলে সাথীগণ ভোজ আয়োজন,
বড় মহা ধুমধাম।
বিকেল হলেই বোন আর আমি
পাড়া চষে বেড়াতাম।
বৈশাখী ঝড়ে নাই আমি ঘরে
আম কুড়াবার ধুম।
সারাদিন পরে পড়াশোনা ঘরে,
দু’চোখে নামতো ঘুম
বাবার শাসন, না পড়া কারণ
মনে যে ভীষণ ভয়।
অনেক কষ্টে বাবাকে তুষ্টে
ঘুম করতাম জয়।
মামার বাড়িতে পুজোর সময়ে
হতো মহা আনন্দ।
পুজোর আসরে ঢাকে তে কাসরে
নৃত্যে কি যে ছন্দ!
বৃষ্টি নামলে বিচ্ছুর দলে
ভিজে ভিজেই স্নান।
শীতের সকালে খেজুরের রসে
জুড়াতো মন প্রাণ।
আমের আঁটিতে বাঁশিটা বাজাতে,
দারুণ ভালো লাগতো!
দুটি হাঁস পালা হিরু ময়নায়
মনটা ভরে থাকতো।
আমাদের বিলে ভেলা চড়ে সেই
শাপলা ফুল তুলতে,
পুকুরের জলে ছিপ চুপে ফেলে
মাছ ধরার নেশাতে।
অঘ্রাণ মাসে নতুন ধানের
পিঠা বানানোর ধুম।
ঘুমের বাহানা মা’ এসে স্নেহেতে,
কপালে আঁকতো চুম।
শেষ নয় বলা শৈশব বেলা,
ছিল ভীষণ মধুর।
মনের কোঠায় নিয়েছে তা ঠাঁই,
শৈশব সুমধুর।

শিল্পী / ঢাকা