[gtranslate]

সঠিক তথ্য এবং তথ্যের সঠিক ব্যবহারের উপাখ্যান


প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৫, ১:২৪ অপরাহ্ন / ৬৮
সঠিক তথ্য এবং তথ্যের সঠিক ব্যবহারের উপাখ্যান

মোঃ বেলায়েত হোসেন-

বিশ্বগ্রাম বা Global village এ তথ্যের অবাধ প্রবাহ অনিবার্য। শত শঠতায়ও তা দুর্নিবার। তথ্যই বর্তমান সময়ে সমৃদ্ধি ও শক্তির অন্যতম হাতিয়ার। এ ক্ষেত্রে ডিজিটিাল প্লাটফর্ম আশির্বাদ স্বরূপ; উৎকর্ষতা সাধনে যুগান্তকারী ভূমিকা রেখে চলেছে নিরবধি। গুগলসহ অন্যান্য অ্যাপস’র ডিজিটাল হাতিয়ার। ব্রাউজারে বিষয় লিখে সার্চ করলেই চলে আসে অজানা সব তথ্য সম্ভার। এ জন্য সর্বদা প্রস্তুত মুক্ত বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়া, এনসাইক্লোপিডিয়া। অন্যতম বড় নিয়ামকের ভূমিকায় আছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (Social Media)। তথ্য প্রবাহ বিশ্বের এক প্রান্তে ঘটে যাওয়া ঘটনা অন্যপ্রান্তে বসবাসকারীদের জানিয়ে দিচ্ছে মুহুর্তেই। সঠিক তথ্যের বিপরীতে ভুলতথ্য (Misinformation), অপতথ্য (Disinformation) এবং ক্ষতিকর তথ্য (Malinformation) শব্দগুচ্ছ সংগত কারণে অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে অনেক বেশি ব্যবহৃত এবং আলোচিত। ডিজিটাল মাধ্যমের উপর ভর করে ছড়িয়ে পড়ছে নিমিষেই। শুধু বিভ্রান্তি সৃষ্টি নয়; হয়ে যায় অপূরণীয় ক্ষতি। রাষ্ট্রের ক্রান্তিলগ্নে, বিশেষ পরিস্থিতিতে যেমন নির্বাচনের সময় প্রতিপক্ষকে গায়েল করতে, অনলাইনে নিজের দলের প্রভাব বৃদ্ধি কিংবা মিডিয়া ট্রায়াল সৃষ্টির লক্ষ্যে খুবই সুপরিকল্পিত ভাবে এ ধরনের তথ্য ছড়ানো হয়। অনিচ্ছাকৃত ভাবে কিংবা যোগাযোগ মাধ্যমের ত্রুটি; যোগাযোগকারীদের অদক্ষতা, অজ্ঞতার কারণে ছড়িয়ে পড়া তথ্যই Misinformation বা ভুলতথ্য। মূল তথ্যটি গভীর ভাবে যাচাই-বাছাই না করে প্রকাশ করাই এর অন্যতম কারণ। একই ভাষার ক্ষেত্রে শিক্ষা, সচেতনতার অভাবের কারণে এবং এক ভাষা থেকে অন্য ভাষায় অনুবাদের ক্ষেত্রে অদক্ষতার দোষে দুষ্ট প্রভাব এটি। গুজবরূপে ছড়িয়ে ব্যক্তি, সমাজ বা রাষ্ট্রের বড় ধরনের ক্ষতি হলেও এটি উদ্দেশ্য প্রণোদিত নয়। যেমন আবহাওয়া অধিদপ্তর জানাল, এ সপ্তাহের শেষে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উক্ত বার্তাটি বিকৃত করে যদি প্রচার করা হয় যে, এ সপ্তাহের শেষে বৃষ্টি হবে; তবে তা Misinformation বা ভুল তথ্য। কোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরূদ্ধে মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টির লক্ষ্যে ইচ্ছাকৃত ভাবে ভুল তথ্য প্রচার করাই Disinformation বা অপতথ্য। যারা এ ধরনের তথ্য ছড়ায় তারা অজ্ঞ বা অদক্ষ নয়; বরং স্বার্থসিদ্ধির জন্য খুব দক্ষতার সাথে এ ধরনের তথ্য ছড়িয়ে অন্যের সম্মানহানি ঘটায়। দু’জন লোক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। মৃত্যুর সে ছবিকে ব্যবহার করে যদি বলা হয় যে, দু’টি পক্ষের সংঘর্ষে এ দু’জন লোক মারা যান অথবা মানহানি বা ব্ল্যাকমেইলিং এর উদ্দেশ্যে প্রযুক্তির মাধ্যমে কোন যৌনতার ভিডিওতে এডিটিং করে মাথার অংশ সংযুক্ত করে তা প্রচার করা হয়; তবে তা Disinformation বা অপতথ্য। কোন একটি তথ্যের ওপর ভিত্তি করে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে তা বিকৃতরূপে উপস্হাপিত তথ্যই Malinformation বা ক্ষতিকর তথ্য; যার কিছু অংশ সঠিক। কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রের ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বনে অপরাধীরা সুপরিকল্পিত ভাবে এ ধরনের তথ্য প্রকাশ করে। ধরা যাক, কোন এলাকায় জাতিগত সংঘাতে অগ্নি সংযোগ, ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সে ঘটনার সূত্রপাতে যদি অন্যান্য এলাকায় যদি ছড়িয়ে দেওয়া হয় যে, আজ এখানে একটি পক্ষের ৫জন লোক মারা গেছে এবং অসংখ্যক আহত হয়েছে। এরূপ ক্ষতিকর তথ্যের কারণে দেশের অন্যান্য স্থানেও দাঙ্গায় ভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর মধ্যে হতাহতের ঘটনা ঘটে। বাংলাদেশ এমন ঘটনার বহু নজির রয়েছে। তবে এ ধরনের তথ্যই Malinformation বা ক্ষতিকর তথ্য। বর্তমান সময়ে সাইবার অপরাধীরা প্রযুক্তির সহায়তায় একটি কন্টেন্টকে বিকৃতরূপে বিশ্বমঞ্চে খুব সহজেই উপস্থাপন করছে। রাষ্ট্রের ক্রান্তিলগ্নে, বিশেষ পরিস্থিতিতে যেমন নির্বাচনের সময় প্রতিপক্ষকে গায়েল করতে, অনলাইনে নিজের দলের প্রভাব বৃদ্ধি কিংবা মিডিয়া ট্রায়াল সৃষ্টির লক্ষ্যে খুবই সুপরিকল্পিত ভাবে এ ধরনের তথ্য ছড়ানো হয়। ভুল তথ্য, অপতথ্য অথবা ক্ষতিকর তথ্যের প্রলয় থেকে বাঁচতে প্রয়োজন সঠিক তথ্যের অবাধ প্রবাহ। সেটি ডিজিটাল যুগের ডিজিটাল যুদ্ধ। সে জন্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে রয়েছে একজন মুখপাত্র; যার মাধমে জানা যাবে সঠিক তথ্য। আর এর অন্যতম প্রধান মাধ্যম হচ্ছে তথ্য অধিকার আইন-২০০৯। এ পর্যন্ত বিশ্বের ১২৮ টি দেশে তথ্য সংশ্লিষ্ট প্রণীত আইনের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশের নামও। এটি রাষ্ট্রের জন্য অনেক বড় অর্জন। বহু প্রতিকূলতার মাঝেও আমাদের দেশে সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, সরকারি ও বিদেশী অর্থায়নে পরিচালিত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণে, দুর্নীতি রোধকল্পে এবং সাধারণ মানুষকে তথ্য সমৃদ্ধ করতে তথ্য অধিকার আইন- ২০০৯ প্রণীত হয়। তথ্য মানুষের অধিকার; তা আইনের ৪ নম্বর ধারায় উল্লেখ আছে। সে অধিকার নিশ্চিত করতে আইনটির ২ নং ধারার (ঘ) এর (চ) তে উল্লেখিত দাপ্তরিক নোট সিট বা নোট সিটের প্রতিলিপি ব্যতিত কোন কর্তৃপক্ষের গঠন, কাঠামো ও দাপ্তরিক কর্মকান্ড সংক্রান্ত যে কোন স্মারক, বই, নকশা, মানচিত্র, চুক্তি, তথ্য-উপাত্ত, লগ বহি, আদেশ, বিজ্ঞপ্তি, দলিল, নমুনা, পত্র, প্রতিবেদন, হিসাব বিবরণী, প্রকল্প প্রস্তাব, আলোকচিত্র, অডিও, ভিডিও, অংকিতচিত্র, ফিল্ম, ইলেকট্রনিক প্রক্রিয়ায় প্রস্তুতকৃত যে কোন ইনস্ট্রুমেন্ট, যান্ত্রিক ভাবে পাঠযোগ্য দলিলাদি এবং ভৌতিক গঠন ও বৈশিষ্ট্য নির্বিশেষে অন্য যে কোন তথ্যবহ বস্তু বা উহাদের প্রতিলিপিকে তথ্য হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। তথ্যের সঠিক ব্যবহার বিষয়টি আজও অধিকাংশের কাছে অনেকটা অবিবেচ্য; অগ্রাহ্য ও উপেক্ষিত হচ্ছে দিনে দিনে। অবারিত তথ্য সমৃদ্ধির লক্ষ্যে আইনের ৬নং ধারায় কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন উপায়ে স্বপ্রণোদিত ভাবে তথ্য প্রকাশের কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া সঠিক তথ্য নিশ্চিত করতে সরকারি দপ্তরসমূহের ২৫ হাজারেরও বেশি ওয়েবসাইট নিয়ে চালু আছে তথ্য বাতায়নের ওয়েব পোর্টাল। স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, সরকারি ও বিদেশী অর্থায়নে পরিচালিত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থাও ওয়েব পোর্টাল চালু করেছে। ওয়েব পোর্টালে হালনাগাদকৃত তথ্য সরবরাহেও রয়েছে বাধ্যবাধকতা। সে লক্ষ্যে সকল সরকারি কর্তাব্যাক্তিরা জনগণকে সেবা প্রদান বিষয়টি নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে নিজেদের ছবি, নাম, মোবাইল নাম্বার, মেইল ঠিকানাসহ বিস্তারিত তথ্য উক্ত ওয়েব পোর্টালে আপলোড করেন। প্রতারক শ্রেণী সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মোবাইল নাম্বারসহ অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করে ক্লোনিং এর মাধ্যমে নিকট আত্মীয় স্বজন থেকে শুরু করে বিশ্বস্তজনদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়। এছাড়া এসব তথ্যের অপব্যবহারের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যবহৃত অ্যাপসসমূহ হ্যাক করে অশোভনীয়, আপত্তিকর ও সম্মানহানিকর কার্যক্রমের মতো অপরাধে লিপ্ত হয়। আরও দুশ্চিন্তার বিষয় হচ্ছে, সম্প্রতি টাকার বিনিময়ে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) এবং ব্যাংক ব্যালেন্সের মতো গোপনীয় তথ্য আর থাকছে না গোপন। এ দু’টি তথ্য একজন ব্যক্তির জীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুটি তথ্য। এমন গোপন তথ্যের মাধ্যমে প্রায় সবধরনের অপরাধ সংঘটন সম্ভব। ’সব এখানে’ নামক একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এমন অপরাধের অনুসন্ধানের খবর পত্রিকার মাধ্যমে জানা যায়। এসব অপরাধ দমনে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ এর অধীন উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানসমূহেও সঠিক তথ্যের বিপরীতে ভুল, অসম্পূর্ণ, বিভ্রান্তিকর, বিকৃত দিলে ২৪ এবং ২৫ নং ধারা অনুসারে যথাক্রমে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট এবং তথ্য কমিশনে আপীল ও অভিযোগ করার সুযোগ রয়েছে। তথ্য প্রদানকারীর বিরূদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ২৭ নং ধারায় রয়েছে শাস্তির বিধান। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যোজন যোজন উৎকর্ষতা যেমনি আমাদের জীবন ব্যবস্থাকে অত্যাধুনিক ও সহজ করে তুলছে; ঠিক তেমনি ভাবে অপব্যবহারে প্রতিনিয়ত হুমকির সম্মুখীন করছে। সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর ষষ্ঠ অধ্যায়ের বিভিন্ন ধারায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহারসহ ডিজিটাল মাধ্যমে সংঘটিত সকল অপরাধের বর্ণনা এবং দন্ডের বিধান সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে। ১৭ নং ধারায় বলা আছে যদি কোনো ব্যক্তি বা সফটওয়্যার ডেভেলপার বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল্‌স ব্যবহারকারী ইচ্ছাকৃত ভাবে বা জ্ঞাতসারে কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোতে বে-আইনি প্রবেশ করেন বা বে-আইনি মাধ্যমে কোন কম্পিউটার, ডিজিটাল ডিভাইস, কম্পিউটার সিস্টেম, ইলেকট্রনিক সিস্টেম, সার্ভার, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বা সাইবার স্পেসে বেআইনি প্রবেশ করে তথ্য ভান্ডারের কোনো তথ্য চুরি, বিনাশ, বাতিল, পরিবর্তন বা উহার মূল্য বা উপযোগিতা হ্রাসকরণ, বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এজেন্ট দ্বারা নূতন ডাটা উৎপাদন বা অন্য কোনো ভাবে ক্ষতিসাধন, বা কম্পিউটার সোর্স কোড গোপন, ধ্বংস বা পরিবর্তন, বা অন্য কোনো ব্যক্তির মাধ্যমে উক্ত কোড, প্রোগ্রাম, সিস্টেম বা নেটওয়ার্ক গোপন, ধ্বংস বা পরিবর্তন করিবার চেষ্টা বা উক্ত কাজে সহায়তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। মূলত, আইনটিই সর্বোচ্চ ব্যবহারই বর্তমান সময়ে সাইবার জগতে সংঘটিত সকল অপরাধ থেকে আইনী সুরক্ষা ও প্রতিকার পাওয়ার অন্যতম হাতিয়ার। সাক্ষরতার হারের সাথে স্মার্ট ডিভাইস এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সমানুপাতিক সম্পর্ক রয়েছে। পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশে সাক্ষরতার হার ৭৭.৯ শতাংশ। পাঁচ বছরে সাক্ষরতার হার বেড়েছে মাত্র ৩.২ শতাংশ। এ থেকে বুঝা যায় শতভাগ শিক্ষিত হতে হলে আরও বহুদূর পাড়ি দিতে হবে আমাদের। শিক্ষিত মাত্রই সচেতন নয়। আবার শতভাগ শিক্ষিতের শতভাগ সচেতন আরও কতকাল স্বাক্ষী হতে হবে? অন্য দিকে, দেশে ৫২ শতাংশ পরিবারে ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে। বাকী ৪৮ শতাংশ পরিবার তথ্য কিভাবে পেয়ে থাকেন? নিশ্চয় অন্যের ওপর নির্ভরশীল। যাদের ওপর নির্ভরশীল, তারা নিজেরাই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিতে কিংবা তথ্যের সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে শতভাগ সচেতন নয়। সাধারণ নাগরিক ছাড়াও আপতপক্ষে মনে হয় তথ্য সংগ্রহ এবং প্রচারে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ফ্যাক্ট চেকিং শব্দটির বিষয়ে শতভাগ অবগত নয়। যেহেতু, বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে তথ্যের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বার বার, তাই এর ব্যবহারে শর্তারোপ কিংবা অ্যাপসে স্বংক্রীয় ফিল্টারিং এর ওপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারে খুব সহজে কন্টেন্ট তৈরী করা সম্ভব। যার সত্যতা অসচেতন সাধারন মানুষের পক্ষে কিংবা সাধারন দৃষ্টিতে বুঝা দুষ্কর। টাকা উপার্জনকারী কন্টেন্ট ক্রিয়েটররা কিংবা যারা উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে নেতিবাচক কন্টেন্ট তৈরী করে তারা দক্ষতার সাথে সুনিপুনভাবে এ কাজটি করে থাকে। জানুয়ারী থেকে জুন-২০২৫ এ ছয় মাসে ফ্যাক্ট চেকিং সংস্থা রিউমার স্ক্যানার বাংলাদেশ ১৭৯৫ টি ভুল তথ্য সনাক্ত করেছে। যা গত বছর একই সময়ের তুলনায় ৩০ শতাংশ বেশি। প্রচারিত এসব ভুল তথ্যের মধ্যে রাজনৈতিক ৪২.০৭ শতাংশ, জাতীয় ২৪.৭২ শতাংশ এবং আন্তর্জাতিক ১০.৭০ শতাংশ। আর জুলাই ও আগস্ট মাসে সনাক্ত হয়েছে যথাক্রমে ৩১০ ও ৩২০ টি। উক্ত ডাটার প্রতীয়মান যে দিনে দিনে এ সংখ্যা বাড়ছে ক্রমান্বয়ে। এর ধারাবাহিকতায় অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন ঘিরে ভুল তথ্যের মহাপ্রলয়ের দৃশ্য দেখার অপেক্ষায় বৈ-কি। একজন নাগরিক হিসেবে সঠিক তথ্য এবং তথ্যের সঠিক ব্যবহার বিষয়ে প্রতিনিয়ত আমরা কতটুকু দায়িত্বশীল আচরণ করছি; তা নিজের বিবেকের কাছেই প্রশ্নবিদ্ধ। তথ্যের সঠিক ব্যবহারে শিক্ষার হার, ডিজিটাল লিটারেসি এবং নৈতিকতা অন্যতম মানদন্ড। সচেতনতার সামাজিক আন্দোলন এ ক্ষেত্রে অনন্য পদক্ষেপ।

তথ্য সূত্র-তথ্য অধিকার আইন-২০০৯, সমকাল (১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫), রিউমার স্ক্যানার রিপোর্ট, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।