কারেন্ট পোকার আক্রমণে দিশেহারা আমন ধান চাষীরা


প্রকাশের সময় : নভেম্বর ২০, ২০২২, ৮:১৫ অপরাহ্ন / ৩৭২
কারেন্ট পোকার আক্রমণে দিশেহারা আমন ধান চাষীরা

তপন দাস

নীলফামারী প্রতিনিধি

নীলফামারীর ডোমারে হাজারো চাষীর রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে কারেন্ট পোকা। চলতি মৌসুমে আমন ধানে এই পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। অল্প সময়ে খেতে ছড়িয়ে পড়ায় বিপাকে পড়েছে উপজেলার পৌরসভা ও ১০ ইউনিয়নের কৃষকেরা।

কিভাবে এই পোকা দমন করা যায় তা তারা বুঝতেই পারছেন না। বিপর্যয় ঠেকাতে কৃষি বিভাগকে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে কৃষকেরা।

পৌরসভা চিকনমাটি এলাকার কৃষক আশিকুর রহমানের এক একর ৬৬শতাংশ ধান চাষের ১৬শতাংশ জমির ধান সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে।

ডোমার সদর ইউনিয়নের ঘুন্টিপাড়া এলাকার চাষী ওবায়দুল ইসলাম ও আব্দুল কাদের বলেন, ৩ বার স্প্রে করেও এই পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পায়নি ফসল। এমন সমস্যা গতবার আমন মৌসুমেও কিছুটা হয়েছিলো কিন্তু এর ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি কৃষি বিভাগ বলে জানান এই চাষী। প্রতি বিঘা জমিতে ১৮ থেকে ২০ মণ ধান পেতাম এবার কারেন্ট পোকার আক্রমণের ফলে এক বিঘা জমিতে ৫ মন ধান পাচ্ছিনা এবং অনেক জমির ধান পরিপক্ক হওয়ার আগেই কারেন্ট পোকার আক্রমনের ভয়ে কেটে ফেলতে হচ্ছে।

বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের শামসুল ইসলাম ও আনারুল ইসলাম বলেন, কারেন্ট পোকার আক্রমণে আমার ১৬শতাংশ জমির ধান বেশিরভাগ নষ্ট হয়ে গেছে। কারেন্ট পোকার আক্রমণের ফলে ফসল দ্রুত কাটতে হচ্ছে। ধানের দাম সন্তোষজনক থাকলেও আশানুরূপ ফলন না হওয়ায় বিপাকে পড়েছে উপজেলার হাজারো কৃষক।

সোনারায় ইউনিয়ন দেলোয়ার হোসেনের ৩৩ শতাংশ,পাংঙ্গা মটুকপুর ইউনিয়নের মশিয়ার রহমানের ৩৩শতাংশ জমিতে কারেন পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে।

হরিনচড়া ইউনিয়নের শালমারা গ্রামের কৃষক অনিল চন্দ্র রায়ের দুই একর ৩৩ শতাংশ আমন ধান চাষ করেছেন। তার প্রতিটি ক্ষেতেই পোকা আক্রমণ করেছে। পোকার আক্রমণে ফসল নষ্ট হচ্ছে। তিনি তার চাষাবাদের প্রতি বিঘায় (৩৩ শতাংশ) ফলন দুই হতে তিন মন কম হওয়ার আশঙ্কা করছেন।

ডোমার উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ ফরহাদুল হক বলেন, উপজেলার সব এলাকা ঘুরে ধানে পোকার আক্রমনের ব্যাপারে আমরা কৃষকদের সচেতন করেছি, লিফলেট সহ ফলন বৃদ্ধির ব্যাপারে পরামর্শ প্রদান করেছি। এবারে কিছু জমিতে কারেন্ট পোকার আক্রমন হলেও অন্যবারের চেয়ে অনেক ভালো ফলন হয়েছে।

এবার উপজেলায় ১৮হাজার ৪শত ৩৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করা হয়েছে। তার মধ্যে উফশী জাত ১৬হাজার ১৯০হেক্টর, স্থানীয় ধানজাত ৪৫হেক্টর ও হাইব্রীড ২হাজার দুইশত হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে।