বাংলাদেশ স্পোর্টস কমেন্টেটরস এসোসিয়েশনের সম্পাদক নির্বাচিত হলেন ক্রীড়া ভাষ্যকার মো. সামসুল ইসলাম


প্রকাশের সময় : জুন ১১, ২০২৩, ২:৫৫ অপরাহ্ন / ১৭৬২
বাংলাদেশ স্পোর্টস কমেন্টেটরস এসোসিয়েশনের সম্পাদক নির্বাচিত হলেন ক্রীড়া ভাষ্যকার মো. সামসুল ইসলাম

এম. জুলফিকার আলী ভুট্টো, বিশেষ প্রতিনিধি-

মো. সামসুল ইসলাম ক্রীড়া ভাষ্যকার, বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন। বাংলাদেশের এই সময়ের অন্যতম সেরা ক্রীড়া ভাষ্যকারদের একজন, সদ্য গঠিত বাংলাদেশ স্পোর্টস কমেন্টেটরস এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলেন।

আপনাদের পরিচিত কন্ঠস্বর মো. সামসুল ইসলাম। যিনি পেশায় একজন গ্রন্থাগারিক। ১৯৭৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর রাজশাহীর ছোটবন গ্রামে জন্মগ্রহণকারী এই গুণী ব্যক্তিত্ব শৈশব ও যৌবনে ছিলেন, খেলোয়াড় এবং পরবর্তিতে তিনি ক্রীড়া সংগঠক হিসেবেও তার পদচারণা অব্যাহত রাখেন।
১৯৯৬/১৯৯৭ সাল থেকে রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন স্কুল, মাদ্রাসাসহ জাতীয় ও জেলা ভিত্তিক খেলাগুলোতে ধারাভাষ্য করার মাধ্যমে তার ধারাভাষ্য জীবন শুরু।

ধারাভাষ্যকার হিসেবে নিজেকে তৈরি করার ক্ষেত্রে তিনি অনুপ্রেরণা এবং সহযোগিতা পেয়ে ছিলেন তাঁর গুরু বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের এক সময়কার জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার রাজশাহীর সফল ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব মরহুম প্রফেসর খোদাবক্স মৃধার। এভাবেই ১৯৯৬ সালে এইচ.এস.সি পাশ করার পর থেকে তাঁর ধারাভাষ্যকার হয়ে বেড়ে ওঠা শুরু। এক্ষেত্রে তাঁর মায়ের অনুপ্রেরণা, পরিবারের সমর্থন এবং সহযোগিতা তাঁকে আজকের এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছে।

ইতি মধ্যে তিনি বাংলাদেশ বেতার, বিটিভি, এটিএন বাংলা, গাজী টিভি, চ্যানেল নাইন, রেডিও ভূমি, ইনডিপেন্ডেট টিভি, টি স্পোর্টসসহ বিভিন্ন মিডিয়াতে ক্রীড়া ভাষ্যকার হিসেবে সু-নামের সাথে কাজ করেছেন এবং করছেন।

মো. সামসুল ইসলামের পিতা-মরহুম আজহারুল ইসলাম (সরকারি চাকুরিজীবি) ছিলেন, মাতা মোসা. সামসুন নাহার (গৃহিনী) ভাই-বোন হ’ল ৫ ভাই, ১ বোন। তিনি সবার বড়। পরিবারের সদস্য স্ত্রী, দুই মেয়ে। পেশা প্রিন্সিপাল লাইব্রেরীয়ান, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন।
এই প্রতিবেদকের সঙ্গে এক স্বাক্ষাতকারে তিনি বলেন, ক্রিকেটার, এ্যাথলেট এবং ফুটবলার। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে নিয়মিত সব ধরণের খেলায় অংশগ্রহণ করতেন।

মুল ইভেন্ট ছিল ক্রিকেট। রাজশাহী জেলা ক্রিকেট লীগে ফ্রেন্ডস স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে ১৯৯৭ থেকে ২০০৩ পর্যন্ত খেলেছেন। এছাড়া রাজশাহী শিরোইল কলোনী ক্লাব, মহুয়া বাগান এবং অন্যান্য ক্লাবেও ক্রিকেট খেলেন তিনি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান বিভাগের হয়ে ১৯৯৭-২০০২ সাল পর্যন্ত সু-নামের সাথে ক্রিকেট খেলেছেন।

তার সেরা নৈপূণ্য-৫৪ রান রিটায়ার্ড হার্ট, ৫/১৪ (৫ ওভার) রা. বি আন্তঃ বিভাগ ক্রিকেটে।
ক্রীড়া ধারাভাষ্য ক্যারিয়ার প্রথম ধারা বর্ণনা- ১৯৯৬ সালে আন্তঃস্কুল ও মাদ্রাসা ক্রীড়া প্রতিযোগিতায়।
বেতারে প্রথম ক্রীড়া অনুষ্ঠান ১৯৯৯ খ্রি. সালে বাংলাদেশ বেতার, রাজশাহীতে ক্রীড়া আলোচক। ক্রীড়া ভাষ্যকার হিসেবে বাংলাদেশ বেতারে তালিকাভূক্তি ২০০৩ খ্রি. সালে। ক্রীড়া ভাষ্যকার হিসেবে বাংলাদেশ টেলিভিশনে অন্তর্ভূক্তি ২০০৯ খ্রি. সালে।

ক্রীড়া ভাষ্যকার হিসেবে বিদেশ সফর ২০১১ ক্রিকেট বিশ্বকাপ এবং ২০১২ সালে টি-২০ বিশ্বকাপ ক্রিকেট টুর্ণামেন্টে বাংলাদেশ বেতারের পক্ষে শ্রীলংকা সফর।
যে সব মিডিয়ায় ক্রীড়া ভাষ্যকার হিসেবে কাজ করেছেন ১৭ মার্চ-২০০৬ বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে কেনিয়া বনাম বাংলাদেশ ক্রিকেট ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশ বেতারে শুরু। ১১ মার্চ-২০০৯ ১ম সুপার কাপ ফুটবল ম্যাচ দিয়ে বিটিভিতে, ২০১০ সালে এটিএন বাংলায় এবং পরবর্তিতে ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন, জি টিভি, চ্যানেল নাইন, নাগরিক টিভি, বাংলাদেশ বেতার ও রেডিও ভূমিতে নিয়মিত ক্রীড়া ভাষ্যকার এবং বিশ্লেষক হিসেবে কাজ করেছেন।

সামাজিক ও সাংগঠনিক কর্মকান্ড তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং করছেন। বাংলাদেশ স্পোর্টস কমেন্টেটর্স ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন, বাংলাদেশ গ্রন্থাগার সমিতির যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতি রাজশাহীর আজীবন সদস্য, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন অফিসার্স সংঘের ক্রীড়া/সাংস্কৃতিক সম্পাদক এবং পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান অফিসার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক। সর্বশেষ বাংলাদেশ স্পোর্টস কমেন্টেটর্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।

ক্রীড়া ধারা বর্ণনা এবং ক্রীড়া বিষয়ক অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় আধুনিকতার অগ্রপথিক হিসেবে নিজেকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন এ ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব মো. সামসুল ইসলাম। প্রতিভাবান এই গুণী মানুষটি ক্রীড়াঙ্গনের নানাবিধ কর্মকান্ডের সাথে গত দুই দশক নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন এবং এদেশের ক্রীড়াঙ্গনের সামগ্রিক উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখছেন।

তিনি গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞানের ছাত্র তথাপি ক্রীড়াঙ্গনে তাঁর কর্মকান্ড আমাদের উৎসাহিত এবং অনুপ্রাণিত করে। কঠোর পরিশ্রম, মেধা, দক্ষতা, যোগ্যতা, অধ্যাবসায়, চর্চা, সৃজনশীলতা, অসাধারণ ব্যাক্তিত্ব এবং সর্বোপরি শিল্পমনস্ক মনন দিয়ে তিনি এদেশের ক্রীড়া ধারা বর্ণনা এবং উপস্থাপনায় একটা নতুন মাত্রা যুক্ত করেছেন। পারিবারিক স্ত্রী এবং দুই কন্যা নিয়ে স্বাচ্ছন্দেই কাটছে এই ক্রীড়া ভাষ্যকার মো. সামসুল ইসলামের জীবন।

সাক্ষাৎকার গ্রহণ ও সম্পাদনা-
এম. জুলফিকার আলী ভুট্টো।