ক্ষমতাসীনদের চীন সফর: নজর রাখছে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র


প্রকাশের সময় : মে ১৫, ২০২৪, ৭:২৯ অপরাহ্ন / ১৩০
ক্ষমতাসীনদের চীন সফর: নজর রাখছে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র

নিজস্ব প্রতিনিধি-

আওয়ামী লীগ এবং তার আদর্শিক জোট ১৪ দলের নেতাদের চীন সফরে হিড়িক পড়েছে। আওয়ামী লীগ এবং তার সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর এই চীন সফরকে ঘিরে কূটনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানামুখী আলাপ আলোচনা। ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশই ১৪ দল এবং আওয়ামী লীগের নেতাদের চীন সফরের ব্যাপারে দৃষ্টি রাখছেন। তবে তারা এই বিষয় নিয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হচ্ছেন না। বিষয়টি তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয় হিসেবেই মনে করছেন।’

রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের ১৪ দলের নেতৃবৃন্দ এখন চীন সফর করছেন। রাশেদ খান মেনন ছাড়াও আওয়ামী লীগের শরিক এই জোটের অন্যান্য নেতারাও এই সফরে রয়েছেন। চীনপন্থী রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত দিলীপ বড়ুয়া, শিরীন আখতার সহ শরিকদের প্রায় সবাই এই সফরে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। আর এই সফরের পরপরই আওয়ামী লীগের অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের একটি ৫০ সদস্যের বিশাল দল যাচ্ছে চীন সফরে। সেই সফরে নেতৃত্ব দেবেন সিরাজগঞ্জ-১ আসনের এমপি তানভীর শাকিল জয়। এর পরপরই কাজী জাফরউল্লাহ নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল চীন সফরে যাবেন।

পরপর তিনটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের চীন সফর নিয়ে কূটনৈতিক অঙ্গনে নানারকম প্রশ্ন উঠেছে। আর এই ব্যাপারে ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র দৃষ্টি রাখছে বলে কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে।

হঠাৎ করে আওয়ামী লীগে চীন সফরের হিড়িক কেন এই নিয়ে নানামূখী আলোচনা হচ্ছে’। তবে আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা বলছেন, এটি হঠাৎ করেই নয়। আওয়ামী লীগের নেতারা বিভিন্ন সময়ে ভারত সফরও করেন। ভারতেও বিভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা এবং রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ডের আলাপ আলোচনার জন্য মতবিনিময় করা হয়। ভারতীয় প্রতিনিধিদলও বাংলাদেশে আসেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও বাংলাদেশ থেকে প্রতিনিধি দল নিয়মিতভাবে যায়। কিন্তু এবার চীনের সফরগুলো সব পাশাপাশি সময় এসেছে। আমন্ত্রণ গুলো কাছাকাছি সময়ে এসেছে। এই জন্য বিষয়টিকে বড় করে দেখা হচ্ছে৷ এটি আসলে একটি রুটিন কাজ।’

আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলছেন, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। আর এই রাজনৈতিক সম্পর্কের কারণেই আওয়ামী লীগকে তারা আমন্ত্রণ জানিয়েছে। তবে কূটনৈতিক মহল মনে করছেন, চীনের আগ্রহেই এই সফরগুলো হচ্ছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক বলয়ে চীনের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা হিসেবে এই সফরকে দেখছেন অনেকে।

তবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পরিষ্কার বলা হচ্ছে, আওয়ামী লীগের নিকটতম বন্ধু হল প্রতিবেশী ভারত। চীন তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পার্টনার। আর এই কারণেই আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করেন, ভারতের সাথে তাদের এক ধরনের রাজনৈতিক এবং মনস্তাত্ত্বিক সম্পর্কের বন্ধন রয়েছে, যা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে সৃষ্টি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চীনের অর্থনৈতিক বলয় বিস্তার এবং আওয়ামী লীগ এবং শরিকদের নেতৃবৃন্দের চীন সফর নিয়ে ভারত কোন মন্তব্য না করলেও বিষয়টি নিয়ে তারা দৃষ্টি রাখছে।’

সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের রাষ্ট্রদূত প্রণয় কুমার ভার্মা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান এবং আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বস্ত্র এবং পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকের সঙ্গেও এক সপ্তাহের মধ্যে সাক্ষাৎ করেছেন। কাজেই আওয়ামী লীগ যেন চীনমুখী রাজনীতির দিকে ঝুঁকে না পরে সে বিষয়ে ভারতের নজর আছে। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই বিষয় নিয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছে বলেও জানা গেছে।’