মোঃ সামিউল আলম সায়মন নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ
নীলফামারীর ডোমারে নিজের পরিত্যাক্ত ঘরে আগুন লাগিয়ে দিয়ে অন্যজনকে ফাসানোর চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে ডোমার উপজেলা মৌজা পাঙ্গা গ্রামের নালা পাড়ায়। ওই এলাকার মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে নূর মোহাম্মদ ও তার স্ত্রী নিজেদের পরিত্যাক্ত ঘরে আগুন লাগিয়ে দিয়ে তার নিজের বড়ভাই নূর ইসলামকে ফাসানো ও তাদের বাড়ীঘর জালিয়ে দেওয়ার জন্য এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী নূর ইসলাম।
সরেজমিনে জানা যায়,‘গত ৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে নূর মোহাম্মদের স্ত্রী কহিনুর বেগম তাদের পরিত্যাক্ত ঘরে আগুন লাগিয়ে দিয়ে পালানোর সময় নূর ইসলামের পরিবারের শাহিনা বেগম ও তার মেয়ে সিনহা দেখে ফেলে। এরই মধ্যে আগুনের বড় ফুলকি দেখার মিললে নূর ইসলামের পরিবারের লোকজনের চিৎকারে এলাকাবাসী ছুটে এসে আগুন নেভাতে গেলে কহিনুর বেগম আগুন নেভাতে বাধা প্রদান করে। আগুন যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য বাধা উপেক্ষা করে এলাকাবাসী আগুন নেভায়।’
আগুন নেভাতে আসা ওই এলাকার রণজিৎ বর্মণ বলেন,‘ আগুন আগুন চিৎকার শুনে আমরা নূর ইসলামের বাড়ী এসে দেখি তার ভাইয়ের পিছনের পরিত্যাক্ত ভাঙ্গা ঘরে আগুন জ্বলছে। আমরা দেখে জলদি পানি দিয়ে নেভাতে গেলে নূর মোহাম্মদের স্ত্রী আমাদের আগুন নেভাতে বাধা দিতে থাকে। কিন্তু আগুন যেন ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য আমরা তার কথা না শুনে আগুন নেভাই।’
আগুন নেভাতে আসা রঞ্জিতা রানী রায় বলেন,‘আগুন আগুন চিৎকার শুনে এসে দেখছি কহিনুর আপার পরিত্যাক্ত ঘরে আগুন জ্বলছে। ওদের বাসায় তখন কোনো পুরুষ মানুষ ছিল না। আমরা টিবওয়েল থেকে পানি দিয়ে আগুন নেভাতে গেলে কহিনুর আপা আগুন নেভাতে দিচ্ছিলো না। তাদের ঘরে আগুন লাগছে তারাই আমাদের আগুন নেভাতে না দেয়। কেনো যে এমন করলো বুঝতে পারছি না।’
নূর ইসলামের পরিবারের সদস্য শাহিনা বেগম বলেন,‘দুপুরে জুম্মার নামাযের সময়ের ঘটনা। বাড়ীর পুরুষ মানুষেরা সবাই মসজিদে নামায পড়তে গেছে। তখন আমি আর আমার মেয়ে সিনহা টিউবওয়েলের পাড়ে গোসল করতেছিলাম। এমন সময় দেখি আমার চাচি শাশুড়ী কহিনুর বেগম সেই ঘরে পাটের খড়িতে গ্যাসলাইট দিয়ে চারিদিকে আগুন জালিয়ে দিয়ে দৌড়ে চলে যায়। আগুন আগুন করে আমি চিৎকার করলে এলাবাসী ছুটে তাদের বাধা সত্তে¡ও আগুন নেভায়।’
ভুক্তভোগী নূর ইসলাম বলেন,‘আমার ভাই নূর মোহাম্মদের সাথে আমার জমির সিমানা নির্ধারণ নিয়ে বিরোধ চলে আসছে এবং তা নিয়ে একটা মামলা আদালতে চলছে। আজকে তারা আমাকে ফাসানো ও ওই ঘরের আগুন যাতে আমাদের ঘরে লেগে সব জ্বলে পুড়ে মারা যাই সেজন্য তারা তাদের নিজের ঘরে আগুন লাগিয়েছে। তার ঘটনাটি ঘটিয়েছে এমন যখন বাসাতে কোনো পুরুষ মানুষ ছিলো না। যাতে করে আগুন লাগলে কেউ বুঝতে ও নেভাতে না পারে। কিন্তু আল্লাহর রহমতে আমাদের পরিবারের লোকজন টের পেয়ে এলাকাবাসীকে ডেকে আগুন নিভিয়াছে।’
তিনি আরো বলেন,‘তারা আমাদের ঘর বাড়ী জালিয়ে আমাদের হত্যা করার জন্য এই পরিকল্পনা করেছিলো। আমি এ বিষয়ে থানায় একটি অভিযোগও দিয়েছি।’
অভিযুক্ত নুর মোহাম্মদের বাড়ী গিয়ে তার স্ত্রী কহিনুর বেগমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন,‘আমার ঘরে আগুন লাগছে মানুষ এসে কেনো আগুন নেভাবে। আমি তাদের আগুন নেভাতে বাধা দেই।’
ঘটনার বিষয়ে ডোমার থানার অফিসার ইনচার্জ মাহমুদ উন নবী বলেন,‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এ/ মনি ২১
আপনার মতামত লিখুন :