মিলন স্মৃতি পাঠাগারের নতুন ঘর নির্মাণের দায়িত্ব নিলেন ডাক্তার মুরাদ হাসান এমপি


প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ৪, ২০২২, ৭:১৫ অপরাহ্ন / ৪৪৮
মিলন স্মৃতি পাঠাগারের নতুন ঘর নির্মাণের দায়িত্ব নিলেন ডাক্তার মুরাদ হাসান এমপি

 

কামরুজ্জামান লিটন, সরিষাবাড়ী(জামালপুর) প্রতিনিধি:

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে ‘মিলন স্মৃতি পাঠাগারে’র নতুন ঘর নির্মানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইসিটি উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়ের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দায়িত্ব নিলেন সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ও বর্তমান সংসদ সদস্য ডাক্তার মুরাদ হাসান এমপি।

 

শনিবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা রাতে উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের হাসড়া মাজালিয়া গ্রামে মিলন স্মৃতি পাঠাগারের নতুন ঘরের ভিত্তি প্রস্তর নির্মান অনুষ্ঠানে আলোচনা সভার আয়োজন করে মিলন স্মৃতি পাঠাগারের উদ্যোক্তা ও ‘জয় বাংলা অ্যাওয়ার্ড’ প্রাপ্ত আতিফ আসাদ।

আলোচনা সভায় ডোয়াইল ইউনিয়নের ৪, ৫, ৬ নং ওয়ার্ড মহিলা ইউপি সদস্য ডলি আক্তার, যুবলীগনেতা রইচ উদ্দিন, মিন্টু মিয়া, নজরুল ইসলাম দরবেশ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এ সময় পৌর কাউন্সিলর সাখাওয়াত আলম মুকুল, শরিফ আহম্মেদ নিরব, শামীম মাষ্টার, জুয়েল রানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা শেষে প্রধান অতিথি ডাক্তার মুরাদ হাসান এমপি পাঠাগারের ঘর নির্মানের ভিত্তি প্রস্তর নির্মান করেন। এর মধ্যদিয়ে সজিব ওয়াজেদ জয়ের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করলেন মুরাদ হাসান এমপি।

জানা গেছে, উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের হাসড়া মাজালিয়া গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে শেখ মুহাম্মদ আতিফ আসাদ। সাত ভাই-বোনের মধ্যে সে সবার ছোট। ছোটবেলা থেকেই বইয়ের প্রতি বেশ ঝোঁক ছিল তার। বইয়ের প্রতি তার অদম্য ভালবাসা আর বই পড়ার ঝোঁক থেকেই পাঠাগার গড়ার ভাবনায় পড়েন আসাদ। শুরু করেন বন্ধু-বান্ধবদের কাজ থেকে বই সংগ্রহের কাজ। শুধু তা-ই নয়। ইটভাটায় দিন মজুরের কাজ করেও বই কেনাসহ পড়াশুনা চালিয়ে এসেছেন।

অবশেষে ২০১৮ সালে বড় ভাইয়ের নামে মিলন স্মৃতি পাঠাগার গড়ে তুলেন শেখ মোহাম্মদ আতিফ আসাদ। দরিদ্র পরিবারের সন্তান হয়েও বইয়ের প্রতি ছিল তার অদম্য ভালবাসা। সেই ভালবাসা থেকেই বন্ধু-বান্ধবের কাছ থেকে বই সংগ্রহ করতেন আসাদ। এলাকার নানা বয়সী মানুষ তার পাঠাগার থেকে বই সংগ্রহ করে পড়ছে, শিখছে নানা অজানা বিষয়। এলাকার প্রায় সকল মানুষের কাছেই আসাদ সুপরিচিত।

শুরুতে সাইকেলে করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বই বিতরণ করতেন আসাদ। মানুষের মাঝে বই পড়ার আগ্রহ বাড়াতেই তার এ উদ্যোগ। শখের এই পাঠাগার গড়তে তাকে নানা জনের কাছে হাত বাড়াতে হয়েছে। সহ্য করতে হয়েছে নানা অবহেলা। তবুও নিজেকে গুটিয়ে নেননি আসাদ। এখন তার পাঠাগারে রয়েছে ভিন্ন স্বাদের হাজারো বই। তবে তার এই বইগুলো সংরক্ষণের জন্য নেই কোন সুব্যবস্থা। বসবাসের ঘরের বিভিন্ন কক্ষে সাজিয়ে রেখেছেন বইগুলো। সেখানে বই সংরক্ষনের জন্য নেই কোন ভালো আসবাবপত্র। কোন মতে সাজিয়ে রেখেছেন বই। এভাবে পেরিয়ে গেছে ৫টি বছর। মানুষকে বই পড়ায় আগ্রহী করে তোলায় তার জুড়ি মেলা ভার। সমাজের মানুষের প্রতি এই কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য চলতি বছরের নভেম্বরে তাকে জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়।

চলতি বছরের গত ১২ নভেম্বরে ঢাকার সাভারে শেখ হাসিনা যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে পুরষ্কার বিতরন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে (সিআরআই) সেন্টার ফর রিসার্চ ইনফরমেশন। এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইসিটি উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয় তাকে জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেন। অ্যাওয়ার্ড প্রদান শেষে পাঠাগার সংশ্লিষ্ট নানা সমস্যা সমাধানের পরামর্শ দেন সজিব ওয়াজেদ জয়।

পরে আসাদ তার পাঠাগারের নানা সমস্যার কথা তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন মহলে সহযোগিতার আবেদন জানায়। বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্য ডাক্তার মুরাদ হাসান এমপির দৃষ্টিগোচর হলে শনিবার রাতে পাঠাগারের নতুন ঘর নির্মানের ভিত্তি প্রস্তর নির্মান করেন।

এ-বিষয়ে আতিফ আসাদ জানান, বর্তমানে জামালপুরের আশেক মাহমুদ কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সে। মানুষের মাঝে বই পড়ার আগ্রহ বাড়াতেই তার এই উদ্যোগ। এমন উদ্যোগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইসিটি উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয় তাকে ‘জয় বাংলা অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করেন। অ্যাওয়ার্ড প্রদান শেষে পাঠাগার সংশ্লিষ্ট নানা সমস্যা সমাধানের পরামর্শ দেন জয় ভাই। তারই ধারাবাহিকতায় আমাদের সংসদ সদস্য মুরাদ হাসান এমপি উদ্যোগে পাঠাগারের নতুন ঘর নির্মানের শুভ উদ্বোধন করা হয়।

এ/ মনি