মেহেরুল ইসলাম মোহন নাটোর
নাটোরের লালপুর উপজেলার বুধপাড়া কালী মন্দিরে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে ৭ দিন ব্যাপী ৫৩৩ তম কালীপূজা উদযাপিত হয়েছে। এ বছর উক্ত মন্দিরে প্রতিমার উচ্চতা ছিল ৩৩ ফুট এবং এই প্রতিমাটি উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় প্রতিমা বলে জানা গেছে।
রবিবার(৩০শে ডিসেম্বর-২২) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,প্রতিমা বিসর্জনের শেষ মূহুর্তে ঢাক ঢোল,শঙ্ক আর উলু ধ্বনিতে মুখরিত মন্দির প্রাঙ্গণ।পাশেই বসছে ঐতিহ্যবাহী কালী মেলা। ভক্তকুল আর দর্শনার্থীতে সরগরম পুরো এলাকা।
এ বিষয়ে লালপুর উপজেলা হিন্দু,বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার সরকার বলেন, উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় কালীপূজা হয়েছে এখানে। যার উচ্চতা প্রায় ৩৩ ফুট।গত ২৩ অক্টোবর হতে আদ্য ৩০শে অক্টোবর মোট ৭ দিন ব্যাপী ৫৩৩ তম এই কালীপূজা উদযাপননের আজ সমাপনী দিবস।
তিনি আরো বলেন, পাক-ভারত উপমহাদেশের প্রাচীনতম ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলির অন্যতম এই মন্দিরে পূজা চলাকালীন শতাধিক পাঁঠা বলি হয়ে থাকে। এছাড়া শুভশক্তির বিজয়ের এ দেবীকে মিষ্টান্ন, অন্ন বা লুচি, মাছ ও মাংস উৎসর্গ করা হয়। এখানে দূরদুরান্ত এমনকি দেশের বাহিরের থেকেও ভক্তরা অর্চনা দিতে আসেন এখানে।
মন্দির কমিটি সূত্রে আরও জানা যায়,নবাবী আমলে বর্গি হাঙ্গামায় ভারতের মুর্শিদবাদের বহরমপুর খাগড়া থেকে ৬০ ঘর কাঁসা শিল্পী উপজেলার বুধপাড়ায় বসতি গড়েন। তাঁরা বঙ্গাব্দ ৮৯৭ সালে (১৪৯০ খ্রি.) অর্থাৎ ৫৩৩ বছর আগে শ্রীষচন্দ্র চক্রবর্তীর দানকৃত জমিতে কালীপূজা অর্চনার জন্য মন্দির নির্মান করেন। বাংলা ১৩৩২ সালে জনৈক লাল কেনেডিয়ার স্ত্রী জানকী বাঈ-এর অনুদানে মন্দিরটি পাকা করা হয়। প্রতি বছর কার্তিক মাসে কালীপূজা ও সপ্তাহ ব্যাপী মেলা চলে। তবে প্রাচীনতম এই মন্দিরের উন্নয়নকল্পের হাজার বিঘা জমি বেদখলে রয়েছে বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ মোহন সাহা বলেন,লালপুর উপজেলার দুয়ারিয়া, মহেশ্বর, টিটিয়া,বুধিরামপুর, বৈদ্যনাথপুর, গোপালপুর ও গুরুদাসপুর মৌজায় মন্দিরের নামে প্রায় দেড় হাজার বিঘা জমি রয়েছে। মন্দির চত্ত্বরের প্রায় আট বিঘা জমি ছাড়া সব বেদখল হয়ে আছে। এবিপুল পরিমাণ সম্পত্তি উদ্ধারে মামলা চলছে।
আপনার মতামত লিখুন :