পলাশ হোসেন, রংপুরঃ
রংপুরের বদরগঞ্জের যুবক শ্যাম সুন্দর রায় প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন হেমা শর্মাকে। হেমার পরিবার এ বিয়ে মেনে নিতে পারেনি। মেয়ের বয়স ১৮ বছরের নিচে দেখিয়ে পুলিশের মাধ্যমে হেমাকে ফিরিয়ে নেন বাবা রাকেশ শর্মা। এরপর মেয়েকে আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে লুকিয়ে রাখেন। এদিকে স্ত্রীকে ফিরে পেতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন শ্যাম সুন্দর।
আজ রোববার হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দ সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ শুনানি শেষে শ্যাম সুন্দরের হাতে তাঁর স্ত্রীকে তুলে দেন। শ্যাম সুন্দর রায় বদরগঞ্জ পৌর শহরের মাস্টারপাড়া গ্রামের দ্বিজেন্দ্র নাথ রায়ের ছেলে।
শ্যাম সুন্দরের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, পৌর শহরের পুরাতনবাজার পাড়ার রাকেশ শর্মার মেয়ে হেমা শর্মার (১৮) সঙ্গে শ্যামের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মেয়ের পরিবার বেশ বিত্তশালী হওয়ায় এই সম্পর্ক তাঁরা মেনে নিতে পারেননি। চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি হেমা শর্মা একাই শ্যামের বাড়িতে চলে আসেন। ঘরোয়াভাবে তাঁদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।
বিয়ের খবর জানার পর হেমার বাবা মেয়েকে অপ্রাপ্তবয়স্ক দেখিয়ে শ্যাম সুন্দর রায়ের বিরুদ্ধে বদরগঞ্জ থানায় অপহরণ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অভিযোগ দেন। মামলার পর পুলিশ হেমাকে স্বামীর বাড়ি থেকে তুলে এনে বাবার হাতে তুলে দেয়। এরপর থেকে হেমাকে আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে লুকিয়ে রাখেন বাবা।
শ্যামের পরিবার জানায়, পুলিশ নিয়ে যাওয়ার পর থেকে শ্যাম সুন্দর তাঁর স্ত্রীকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না। অবশেষে স্ত্রীকে ফিরে পেতে গত ৩১ অক্টোবর আইনজীবীর মাধ্যমে হাইকোর্টে আবেদন করেন। ওই আবেদন আমলে নিয়ে ১৩ নভেম্বর হেমা শর্মাকে সশরীরে হাজির করতে রংপুরের পুলিশকে নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত। আজ হেমা শর্মাকে হাইকোর্টে হাজির করা হলে বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দ শুনানি শেষে তাঁকে শ্যাম সুন্দর রায়ের হাতে তুলে দেন।
শ্যাম সুন্দর রায়ের মামা অরূপ রায় বলেন, ‘মেয়েটি হাইকোর্টকে বলেছে, সে শ্যাম সুন্দরকে ভালোবেসে বিয়ে করেছে। বিয়ের পর পুলিশ তাকে আটক করে তার পরিবারের হাতে তুলে দেয়। এরপর তাকে বদরগঞ্জ পৌর শহরের তার মামা গণেশ শর্মার বাড়িতে আটকে রেখেছিলেন। সে স্বামী শ্যাম সুন্দরের কাছে যেতে চাইলে হাইকোর্ট তার হাতে তুলে দেন।’
হাইকোর্টের রায়ে খুশি শ্যাম সুন্দর রায় বলেন, আমি ভালোবেসে হেমা শর্মাকে বিয়ে করেছি। কিন্তু পুলিশ আমার কাছ থেকে জোর করে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে তার পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছিল। আমি বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করেও স্ত্রীকে না পেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হই। সেখানে আমি সঠিক বিচার পেয়েছি।
আপনার মতামত লিখুন :