কাজিপুরের দুর্গম চরে দুই ছাত্র পেল মেডিকেল পড়ার সুযোগ


প্রকাশের সময় : মার্চ ৪, ২০২৪, ৯:৫৮ পূর্বাহ্ন / ১৯৬
কাজিপুরের দুর্গম চরে দুই ছাত্র পেল মেডিকেল পড়ার সুযোগ

নাবিউর রহমান (চয়ন) কাজিপুর থেকে:- সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চল খাসরাজবাড়ী ইউনিয়নের যুক্তিগাছা গ্রামের দুই বন্ধু আবদুল মালেক ও আকাশ কুমার পেল মেডিকেল পড়ার সুযোগ। তারা দুজনই পরস্পর পরস্পরের স্কুল পড়ুয়া বন্ধু। এবং তারা দুজনেই চরের স্থানীয় খাসরাজবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় স্কুল হতে ২০২১সালে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করে ও শেরপুর সরকারি কলেজ হতে জিপিএ-৫ পেয়ে ২০২৩ সালে এইচএসসি পাশ করেন। মালেক মেধা তালিকায় ৯৩০ তম, আকাশ মেধা তালিকায় ১৯৫৩ তম।

২০২৪ সালের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় তারা দুজন শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে সুযোগ পেয়েছে।

মেডিকেলে সুযোগ প্রাপ্ত শ্রী আকাশ কুমার বলেন, আমার বাবা আমার স্বপ্ন ছিল ভালো করে পড়াশোনা করে ভালো কিছু হই। তাই সেরকম করেই পড়াশোনা করে আজ মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পেয়েছি ঈশ্বরের দয়ায়। ও কিছু মানুষের সহযোগিতায় তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে। মেডিপ্লাস এডমিশন এন্ড একাডেমিক কোচিং শেরপুর। চরের মানুষ আমরা ভালো করে সব জানি না। তাদের দিকনির্দেশনা আমাদের সুযোগ করে দিয়েছে। আমি ভবিষ্যতে ডাক্তার হয়ে সমাজের অসহায় ও সুবিধা বঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই এটাই আমার স্বপ্ন।

গত শুক্রবার খাসরাজবাড়ি চরে মালেক ও আকাশ কুমারকে সংবর্ধনা দিতে আসা। মেডিপ্লাস এডমিশন এন্ড একাডেমিক কোচিং শেরপুর এর পরিচালক শামিম রেজা বলেন, আমি ভেবেছিলাম চর দুর্গম। কিন্তু এতটা দুর্গম, তা আমি স্বপ্নেও চিন্তা করিনি। এখান থেকে মেডিকেল সুযোগ পাওয়া সত্যি এক অকল্পনীয় ব্যাপার। আমি তাদের দুজনেরই ভবিষ্যৎ জীবনের মঙ্গল কামনা করি। এবং সেই সাথে চাই তাদের মেডিকেল পড়াশোনায় সহযোগিতা করবে এমন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসুক।

সুযোগ প্রাপ্ত আবদুল মালেক বলেন, ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল জীবনে ভালো কিছু হব। এবং একটা স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হব। আমাদের খাসরাজবাড়ি চরের মানুষের ভালো চিকিৎসার কোন সুযোগ নেই বললে চলে। আমি এরকম চিন্তা করতাম, ভবিষ্যৎ জীবনের ডাক্তার হয়ে আমার দুর্গম এলাকার চিকিৎসা সুবিধা বঞ্চিত মানুষের চিকিৎসা সেবা করবো।

আবদুল মালেকের বাবা-মা মোঃ গোলজার হোসেন ও মোছাঃ মাজেদা খাতুন বলেন, আমরা চরের মানুষ নিজেরা লেখাপড়া জানি না। লেখাপড়া না জানলে কত সমস্যা তা আমরা জানি। তাই আমাদের সন্তানদের লেখাপড়া শিখাচ্ছি খুব কষ্ট করে। নিজেরা না খেয়ে থাকলে ও খেতে মাঠে কাজ করে সন্তানের লেখাপড়া চালিয়ে নিচ্ছি ঠিকভাবেই। আমাদের দুর্গম এলাকা থেকে লেখাপড়া করার খুব বেশি সুযোগ নেই। সবাই অল্প একটু লেখাপড়া করে’ই ঢাকায় চলে যায় গার্মেন্টসে চাকরি করতে। আমাদের ছেলে মেডিকেল পড়ার সুযোগ পাওয়ায় আমরা খুব খুশি। আল্লাহর কাছে এটাই চাওয়া সে যেন, ভালো একজন ডাক্তার হয়ে, আমাদের মতো অসহায় মানুষের চিকিৎসা সেবা দেয়।